তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে ক্রমেই যে আমেরিকা ও চিনের সম্পর্ক তিক্ততার দিকে যাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। মার্কিন প্রতিরক্ষার অন্যতম শক্তিশালী সংস্থা লকহিড মার্টিন ও রেথিওন টেকনোলজির তরফে তাইওয়ানকে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা জারি করল চিন। বেজিং জানিয়েছে, এই অস্ত্র চুক্তির ক্ষেত্রে চিনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে দাবি করেছে বেজিং। এছাড়াও তারা সামনে তুলে ধরেছে আমেরিকা ও চিনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের খতিয়ান।
উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি তাইওয়ান ও মার্কিন অস্ত্রচুক্তি অনুযায়ী ১০০ মিলিয়নের দেনা পাওনার কথা হয়েছে। কিন্তু তাইওয়ান সেই অস্ত্র আমেরিকার থেকে কিনে নিক তা চাইছি না চিন। খুব সহজ কূটনৈতিক হিসাবেই তাইওয়ানের মার্কিন ঘনিষ্ঠতা বরদাস্ত করতে পারছে না বেজিং। এই নিয়ে টানা তিনবার তাইওয়ানে ওই দুই মার্কিন সংস্থার অস্ত্র বিক্রিতে বাধ সাধে চিন। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ৬২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মিসাইল আপগ্রেড প্যাকেজের ঘোষণা করে আমেরিকা। সেই সময়ও বাধ সেধেছিল চিন। উল্লেখ্য, তাইওয়ানকে চিন নিজের দাপটে রাখতে চিরকালই সচেষ্ট ছিল। কূটনৈতিক অঙ্কে চিন মনে করে, তাইওয়ান একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ। ফলে তাইওয়ানের অস্ত্র কেনা চিনের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে মনে করে জিনপিং প্রশাসন। উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি তাইওয়ানে পেট্রিওটিক মিসাইল আপগ্রেড নিয়ে আমেরিকা তার একটি পরিকল্পনার ঘোষণা করে। আর সেই পরিকল্পনার পাল্টা জবাব দিতেই চিন বর্তমান অবস্থান নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বেজিং জানিয়েছে, তাইওয়ানে আমেরিকার অস্ত্র বিক্রি 'চিনের নিরাপত্তার স্বার্থকে ক্ষুণ্ণ করছে। আঘাত লাগছে মার্কিন-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে, এছাড়াও তাইওয়ান প্রণালীর স্থিরতা বজায় রাখতেও সমস্যা হচ্ছে।' চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন জানিয়েছেন, 'চিন কড়াভাবে এটির বিরোধিতা করছে ও নিন্দা করছে।' চিন জানিয়েছে, বেজিংয়ের বিদেশ বিরোধী প্রতিবন্ধক আইনের কয়েকটি বিধি অনুযায়ী, যেভাবে রেথিয়ন টেকনোলজি ও লকহিড মার্টিন অপরের অধিকারে বাধা দিয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করছে, তার জেরে পাল্টা বন্দোবস্ত হিসাবে চিনকে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। এদিকে এই ত্রৈদেশিক কূটনীতির মাঝে মার্কিন সচিব মাইক পম্পেও খুব শিগগিরিই তাইওয়ান সফরে যাচ্ছেন। ২ থেকে ৫ মার্চের মধ্যে থাকছে তাঁর সফর। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ড সাই ইং ওয়েনের সঙ্গে তাঁর সেখানে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।