শুক্রবার স্কুল যাচ্ছিলেন পেশায় শিক্ষক অবনীশ কুমার। সদ্য তিনি বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় পাশ করে স্কুল শিক্ষক পদে নিয়োজিত হন। এদিকে, শুক্রবার স্কুলে যাওয়ার সময় অবনীশ কুমারের পথ রোখে দুটি স্কোরপিও গাড়ি। অবিনাশ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শেষ নয়। তাঁকে অপহরণ করে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
বিহারের বেগুসরাইয়ের রাজাপুরার বাসিন্দা অবনীশ কুমার। অভিযোগ, তাঁকে বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। আর অপহরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয় গুঞ্জন নামের এক মহিলার সঙ্গে। এই গোটা ঘটনা বিহারের স্থানীয় পরিভাষায় ‘পকড়ওয়া বিবাহ’ নামে পরিচিত। অবনীশ ও গুঞ্জনের ঘটনায় জানা যাচ্ছে , তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ৪ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। এরপর সরকারি শিক্ষকের পদে চাকরি পেতেই গুঞ্জনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাননি অবনীশ। এমনই অভিযোগ গুঞ্জনের দিক থেকে।
এরপরই গুঞ্জনের আত্মীয়রা দুটি গাড়িতে এসে অবনীশকে মাঝ রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে চলে যান। জানা গিয়েছে, অবনীশ টোটো-তে চড়ে যাচ্ছিলেন স্কুলে। সেই সময় দুটি স্করপিও গাড়ি আসে ও অবনীশকে টোটো থেকে নামিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বিহারের কাটিহারে। সেখানেই স্কুলের শিক্ষক হিসাবে কর্মরত অবনীশ। এদিকে, গুঞ্জনের দাবি, বহু দিন ধরে তাঁদের একসঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তাঁরা বহু হোটেল গিয়েছেন, অবনীশের বাড়িতেও গুঞ্জন থেকেছেন বলে দাবি গুঞ্জনের। পরে যদিও গুঞ্জনকে বিয়ে করতে চাননি অবনীশ, এমনই দাবি শোনা যাচ্ছিল। এদিকে, অনবীশ পালিয়ে গিয়েছেন বলে খবর, আর গুঞ্জন অবনীশের বাড়ি পৌঁছন। যদিও অবনীশের বাড়ির কেউ গুঞ্জনকে মেনে নেননি। গুঞ্জন পুলিশের দ্বারস্থ হন। অবনীশের দাবি, তাঁদের মধ্যএ কোনও প্রেমের সম্পর্ক ছিল না, তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে।
গুঞ্জন বলছেন,' তিনি আমাকে বিয়ে করে সংসার শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন,' গুঞ্জনের অভিযোগ। 'সে আমাকে তার স্কুলেও নিয়ে গিয়েছিল। আমরা চার বছর প্রেম করছিলাম। কিন্তু যখন আমি আমার পরিবারকে বিষয়টি জানাই, এবং আমরা তাকে বিয়ের জন্য যোগাযোগ করি, তখন সে অস্বীকার করে। এটা অগ্রহণযোগ্য ছিল।' এদিকে, অবনীশও পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
'পকড়ওয়া বিবাহ'
এভাবে কাউকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়েকে বিহারে পাকড়ওয়া বিবাহ বলা হয়। স্থানীয়দের মধ্যে এমন নামেই এই বিয়েকে আখ্যা দেওয়া হয়। পুলিশ বলছে, গত ৩০ বছরের প্রেক্ষিতে এমন পাকড়ওয়া বিবাহের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে বিহারে। এই ধরনের বিয়েতে অবিবাহিত পুরুষকে জোর করে বন্দুক দেখিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে সাধারণত।