অনেকে বলেন, এই বিশ্ব যেন ক্রমেই মেরুকরণের দিকে এগোচ্ছে। আগামী দিনে কী হবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। তবে তার মধ্য়েও এমন কিছু কিছু কাহিনি সামনে আসে যা দেখে চমকে ওঠেন অনেকেই। তেমনই এক যুবকের কাহিনি সামনে এসেছে এবার। আসলে তিনি জন্মেছিলেন মুসলিম পরিবারে। কিন্তু তিনি বড় হয়েছেন হিন্দু পরিবারে। এরপর তিনি ফের মুসলিম পরিবারে ফিরে আসেন।
মহম্মদ খলিল ঘোরী। বাড়ি হায়দরাবাদ। বয়স ২২ বছর। তিনি খলিল থেকে আলতাফ হয়েছিলেন। এরপর তিনি আলতাফ থেকে অভিনব সিংও হয়েছিলেন। এবার তিনি ফের তিনি অভিনব থেকে খলিল হয়ে গেলেন। তবে এই যে নানা কোলাজে ভাগ হয়ে যাওয়া জীবন সেই ধাঁধাকে মেলাতে চাইছেন তিনি।
কী হয়েছিল ঘটনাটি?
২০১৪ সালে তিনি হায়দরাবাদের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। কার্যত পেটের টানে তিনি বেরিয়ে পড়েছিলেন মাত্র ১২ বছর বয়সে। এরপর তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার নাম হয়েছিল আলতাফ। এরপর তিনি গাজিয়াবাদের একটা পরিবারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই পরিবারটি ছিল হিন্দু পরিবার। কানপুরের সেই হিন্দু পরিবারে তিনি আশ্রয় পান। তারা তার নাম রাখেন অভিনব।
এদিকে বাড়ির লোকজনও তার খোঁজাখুঁজি করছিলেন। শেষ পর্যন্ত কানপুরে তার খোঁজ মেলে। এরপর তাকে তাঁরা বাড়ি ফিরিয়ে আনেন।
হায়দরাবাদের পুলিশ জানিয়েছেন ওই যুবকের আধার কার্ড করার জন্য় নিয়ে গিয়েছিলেন তার বাবা মা। আর তখন আঙুলের ছাপ দিতেই তার আসল পরিচয়টা সামনে এসে যায়। খলিলের পালিত বাবা সেই আধার কার্ডে নিজের ফোন নম্বর দিয়ে দেন।আর সেই ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ওই যুবকের খোঁজ পেয়ে যায় পুলিশ।
খলিল এখন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। কিন্তু তার সব ডকুমেন্টে তাকে অভিনব বলে দেখানো হয়েছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে খলিল জানিয়েছে, আমার পালিত বাবা মা বলেছিলেন, আসল বাবা মায়ের কাছে থাকাটাই ভালো।
সে জানিয়েছে, স্কুলের বাইরে যখন থাকতাম তখন আমার কোনও বন্ধু ছিল না। ( পালিত বাবা মার সঙ্গে যখন সে থাকত) । আমি মাকে সাহায্য করতাম বা পড়াশোনা করতাম। ওখানে দিদি শিক্ষক হওয়ার জন্য পড়াশোনা করত, আমি তাকে খুশি রাখার চেষ্টা করতাম। মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে খেলতাম। দিদিই তার নাম রেখেছিল অভিনব।
১লা ডিসেম্বর দুজন এলেন। তারা বললেন আমরাই আসল বাবা মা। কিন্তু আমি চিনতে পারছিলাম না। কিন্তু ওরা সব ডকুমেন্ট দেখালেন। কিন্তু ছোটবেলার কিছু আমার মনে নেই। তবে চিকিৎসকদের মতে, প্রচন্ড ভয় বা অবহেলার মধ্যে থাকলে অনেকের আগের স্মৃতি মুছে যায়।