দুই করোনা রোগীর মৃতদেহ গুলিয়ে ফেলার শাস্তি হিসেবে বুধবার চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেন দিল্লির এইমস হাসপাতাল মর্গের এক কর্মী। সাসপেন্ড হলেন আরও এক কর্মী।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ওই দিন বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসে এইমস-এর বিশেষ কমিটি। হাসপাতালের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, ‘বিভিন্ন স্তরে নিয়ম লঙ্ঘন করার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, যার ফলে ওই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া প্রতিটি করকোনা মৃতদেহের সঙ্গে ট্যাগ থাকে, যাতে মৃতের নাম লেখা থাকে। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যের দিয়েও দেহ শনাক্ত করা হয়। এর জন্য তাঁদের পিপিই কিট দেওয়া হয়।’
তিনি জানিয়েছেন, ‘করোনা সংক্রমণের জেরে অধিকাংশ পরিবারই দেহ ফেরত নিতে চায় না। সংক্রমণের ভয়ে দেহ উন্মুক্ত রাখতে তাঁরা ভয় পান। এ ক্ষেত্রেও সে ভাবেই মৃতদেহের ব্যাগে লাগানো ট্যাগ দেখে দেহ শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা। লেবেল সাঁটায় কোনও গন্ডগোল ছিল না।’
শনাক্তকরণের পরে ব্যাগবন্দি চারটি দেহ নিয়ে সমাধিক্ষেত্রের উদ্দেশে রওনা দেয় অ্যাম্বুল্যান্স। গন্ডগোল বাধে সমাধির আগে আত্মীয়েরা মৃতের মুখ দেখতে চাওয়ায়। দেখা যায়, ব্যাগের ভিতরে রয়েছে অপরিচিতের দেহ।
মৃতের পরিবারের দাবি, সোমবার ওই রোগীর মৃত্যুর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের রাতে ফেন করে তা জানায় এবং মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে পৌঁছে দেহ শনাক্ত করতে বলা হয়।
মৃত আঞ্জুমের আত্মীয় গফ্ফর জানিয়েছেন, সকালে হাসপাতালে পৌঁছলে তাঁদের বলা হয়, দেহ ব্যাগের ভিতরে রাখা আছে এবং গোরস্থানে পৌঁছানোর পরে তা দেখতে পাওয়া যাবে। কিন্তু ব্যাগের সঙ্গে থাকা ট্যাগে আঞ্জুমের বদলে সোমলতা নাম দেখে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আঞ্জুমের আত্মীয়রা।
এর পর হাসপাতালে ফিরে খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, এর আগেই আঞ্জুমের দেহ দাহ করা হয়ে গিয়েছে। ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্থানীয় সফদরজঙ্গ থানায় গাফিলতির অভিযোগ জানায় আঞ্জুমের পরিবার। তবে পুলিশের ডিসি দেবেন্দর আর্য জানিয়েছেন, ঘটনায় কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আবার দেখা করলে আঞ্জুমের চিতাভস্ম সমাধিস্থ করার জন্য তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দিতে গেলে তা নিতে অস্বীকার করেন মৃতের আত্মীয়রা। এমনই দাবি এইমস কর্তাদের।