দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত সুমিতে আটকে থাকার পর শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরলেন ২৩৯ জন পড়ুয়া। আজ ভোরে এআই১৯৫৪ উড়ানে দিল্লিতে অবতরণ করেন এই পড়ুয়ারা। বাকি পড়ুয়াদেরও নিরাপদে ইউক্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধাপে ধাপে তাদেরও দেশে ফেরানো হবে। আর তা হলেই ইউক্রেনে ভারতের উদ্ধার অভিযান সফল ভাবে সম্পন্ন হবে।
পূর্ব ইউক্রেনের রাশিয়া সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত সুমিতে ৭০০ জনেরও বেশি ভারতীয় পড়ুয়া ছিলেন। সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতেন তাঁরা। তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রাশিয়া পরপর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করলেও গোলাগুলি থামেনি। রাশিয়া-ইউক্রেন একে অপরের দিকে এই নিয়ে আঙুলও তুলেছিল। এর মাঝে ক্রমেই অধৈর্য হয়ে পড়ছিলেন এটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়ারা। একটা সময়ে পড়ুয়ারা ‘হুঁশিয়ারি’ পর্যন্ত দিয়েছিলেন হেঁটে ৬০০ কিমি পার করার। বলেছিলেন যাত্রাপথে তাঁদের কিছু হলে দায়ী থাকবে সরকার ও ভারতীয় দূতাবাস। পরে অবশ্য তাঁদের উদ্দেশে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অপারেশন গঙ্গার মাধ্যমে ভারতীয় পড়ুয়াদের এই যুদ্ধ বিধ্বস্ত শহর থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৪ দিন সুমিতে দিন কাটে ভারতীয় পড়ুয়াদের। বিদ্যুত্ ছিল না। খাবার, পানীয় জলও ছিল না। ভাইরাল হওয়া বহু ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, পড়ুয়ারা রাস্তায় পড়ে থাকা বরফ নিয়ে গিয়ে তা গলিয়ে জল খাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালের বাঙ্কারে ঠাঁই হয়েছিল পড়ুয়াদের। তবুও তাঁদের নাকে আসত বারুদের গন্ধ। কান ফেটে যেত শেলিংয়ের আওয়াজে। তবে শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সরকারের তত্পরতা এবং ইউক্রেন সরকার ও রেড ক্রসের সহযোগিতায় ৭০০ জনেরও বেশি ভারতীয় পড়ুয়াকে ইউক্রেন থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।