সোমবার রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণের উপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবের সময় ধারাবাহিক আন্দোলনকারীদের আন্দোলনজীবী বলে কটাক্ষ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁদের পরজীবী বলে শ্লেষ করেন তিনি। এই নিয়েই এবার সরব হল বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী এরকম কথা বলে কৃষকদের অপমান করেছেন বলে তাদের দাবি। একই সঙ্গে বিদেশ থেকে কৃষক আন্দোলনের জন্য আসা সমর্থনকে যেভাবে তিনি কটাক্ষ করেছেন, সেটাও ভালো চোখে দেখেননি বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে এফডিআই এখন হল ফরেন ডেস্ট্রাক্টিভ আইডিওলজি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে দেশে একশ্রেণির নতুন লোকের উদয় হয়েছে যারা আন্দোলনজীবী, যারা সব জায়গায় খোঁজ করে বেড়ায় কোথায় প্রতিবাদ শুরু করা যায় তার জন্য। একই সঙ্গে গ্রেটা থুনবার্গযে টুলকিটটি শেয়ার করেছিলেন, ঘুরিয়ে সেই প্রসঙ্গও তিনি উত্থাপন করেন এফডিআই উক্তির মাধ্যমে।
মোদীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সংযুক্ত কিষান মোর্চা বলেছে যে প্রধানমন্ত্রীর এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে দেশ স্বাধীন হয়েছিল আন্দোলনের মাধ্যমে তাই দেশ গর্বিত আন্দোলনজীবীদের নিয়ে। কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ আবার বলেন মোদী আমলে FDI মানে হল — Fear, Deception, Intimidation. রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন যে রাজ্যসভায় নির্দিষ্ট কিছু বলেননি মোদী। লোকসভার প্রাক্তন দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন যে চাষীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলেন যে বিক্ষোভকারীরা সবাই দেশপ্রেমিক, পরজীবী নয়। তারা মানুষের উন্নতিকল্পে প্রতিবাদ করছে বলে তিনি দাবি করেন। বিজেপির প্রাক্তন সঙ্গী শিরোমনি অকালি দলের সুখবীর বাদল বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর এই আন্দোলনকে কোনও ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দেখা উচিত নয়। কোনও ভাবেই চাষীদেরকে বিভক্ত করার চেষ্টা করা উচিত নয় বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে প্রত্যাশিত ভাবেই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাদের মতে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে শরদ পাওয়ার কৃষি সংস্কারের পক্ষে ছিলেন বলে সংসদে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে পাওয়ারের এনসিপি-র দাবি যে তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী মডেল আইন তৈরি করার কথা বলেছিলেন যেটা বর্তমানে যে আইন চালু হচ্ছে, তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সবমিলিয়ে সরকার-বিরোধী চাপানোতর চলল, কিন্তু রাজনৈতিক অভিধানে আন্দোলনজীবী শব্দটি যোগ করে দিলেন মোদী।