সংখ্যালঘুদের নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব। এবার তাঁকে অপসারণের জন্য রাজ্যসভায় বিরোধী সাংসদরা ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব এনেছেন। এর ভিত্তিতে একটি প্রতিনিধি দল উচ্চ কক্ষের মহাসচিবের কাছে একটি নোটিশ জমা দিয়েছে। অভিযোগ, ওই বিচারপতি সম্প্রতি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘এটা হিন্দুস্তান..'এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতির মন্তব্যে রিপোর্ট তলব SCর
জানা যাচ্ছে, ‘এক দেশ এক আইন’ নিয়ে প্রয়াগরাজে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক আলোচনাসভায় যোগ দিয়ে বিচারপতি মন্তব্য করেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠদের ইচ্ছাতেই হিন্দুস্থান চলবে। বিচারপতি শেখর কুমার যাদব দাবি করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠের হয়ে আইন কাজ করে। যাদবকে অপসারণের নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন কপিল সিব্বল, বিবেক টানখা, দিগ্বিজয় সিং, পি উইলসন, জন ব্রিটাস, মনোজ কুমার ঝা, সাকেত গোখলে, রাঘব চাড্ডা এবং ফৌজিয়া খান সহ ৫৫ জন বিরোধী সাংসদ। যাদবের অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য তাঁরা বিচারপতি (তদন্ত) আইন ১৯৬৮ এবং সংবিধানের ২১৮ অনুচ্ছেদের অধীনে নোটিশ জমা দিয়েছেন। নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আয়োজিত আলোচনা সভায় যাদব যে মন্তব্য করেছেন তা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। তাঁর বক্তব্য ছিল, ঘৃণামূলক এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক। তিনি সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে এরকম বক্তব্য রেখেছিলেন।
নোটিশ অনুযায়ী, বিচারপতি জনসাধারণের বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছেন বা ইউসিসি সম্পর্কিত রাজনৈতিক বিষয়ে জনসমক্ষে তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন। সেক্ষেত্রেও তিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন। সাংসদরা বিচারপতির বক্তৃতার একটি ভিডিয়ো ক্লিপও জমা দিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, বিচারপতি এরকম পক্ষপাতদুষ্ট হলে কোনও মামলাকারী আদালতে ন্যায়বিচারের আশা করতে পারে না। তিনি প্রকাশ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। নোটিশে আরও বলা হয়েছে, যাদবের মন্তব্যগুলি সংবিধানের ৫১এ(ই) অনুচ্ছেদের অধীনে নীতিগুলি লঙ্ঘন করে।
সাংসদরা জানান, চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হয়েছে এই প্রস্তাবটি স্বীকার করতে এবং বিচারপতি (তদন্ত) আইন, ১৯৬৮ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য। তাতে সাম্প্রদায়িক বৈষম্য এবং আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিচারপতিকে পদ থেকে অপসারণের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান।