প্রতি বছর ২৫ জুন দিনটিকে 'সংবিধান হত্যা দিবস' হিসেবে পালন করা হবে বলে গতকালই ঘোষণা করেছে সরকার। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। এই আবহে বিজেপি সরকারের এই দিবস পালনের ঘোষণায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এই নিয়ে বিরোধীরা এক সুরে তোপ দেগেছে শাসক বিজেপিকে। আবার পুরনো স্মৃতি টেনে এনে কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়েছে গেরুয়া শিবির। (আরও পড়ুন: সময়ের আগে দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছবে ভারত, দাবি নীতি আয়োগের)
আরও পড়ুন: রাজভবনে সরকরি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ রাজ্যপালের ছেলের বিরুদ্ধে, চরমে বিতর্ক
আরও পড়ুন: 'BJP যদি একই ভুল করে তাহলে লাভ কি…', কংগ্রেসের তুলনা টেনে কড়া বার্তা গডকরির
এই নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, 'গত ১০ বছরে আপনার সরকার প্রতিদিন 'সংবিধান হত্যা দিবস' পালন করেছে। আপনারা প্রতি মুহূর্তে দেশের প্রতিটি গরিব ও বঞ্চিত মানুষের আত্মসম্মান কেড়ে নিয়েছেন।' এদিকে আদমি পার্টির নেত্রী প্রিয়াঙ্কা কক্কর বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, '২০১৪ সাল থেকে শাসক দল প্রতিদিন সংবিধানকে 'হত্যা' করেছে। সম্প্রতি চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনের সময় অনিল মাসি ক্যামেরার সামনে সংবিধানকে খুন করেন। দিল্লিতে, দীর্ঘ ৯ বছরের লড়াইয়ের পরে, দিল্লি সরকার নিজেদের অধীনে সরকারি আধিকারিকদের বদলির অধিকার পেয়েছিল। কিন্তু বিজেপি একটি আইন এনে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে। এটা সংবিধানের হত্যা।'
আরও পড়ুন: অপেক্ষা দু'দিনের, ডিএ-বেতন নিয়ে ১৫ জুলাইতেই বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকার
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষও একই সুরে সুর মিলিয়েছেন এবং বলেছেন যে জরুরি অবস্থা পর্বটি 'ইতিহাসের ঘটনা' ছিল, তবে বিজেপি এই 'পুরনো কার্ড' তাদের রাজনৈতিক সুবিধার্থে খেলতে চাইছে। এদিকে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাংসদ মহুয়া মাজি বলেন, 'যে বিজেপি ৪০০ পেরিয়ে যাওয়ার স্লোগান তুলেছিল, তারা ৪০০ আসন পায়নি। ২০০-র ঘরেই আটকে গিয়েছে। আপনারা (বিজেপি) বর্তমানে কী উন্নয়ন করছেন, দেশকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, সংবিধান অনুযায়ী এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে পারছেন কি না, তা নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত।'
উল্লেখ্য, শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে ঘোষণা করেন, ২৫ জুন তারিখটিতে এবার থেকে প্রতিবছর পালিত হবে সংবিধান হত্যা দিবস। এই নিয়ে শাহ লিখেছিলেন, '২৫শে জুন ১৯৭৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী একনায়কতন্ত্রের মানসিকতা থেকে আমাদের গণতন্ত্রের গলা টিপে হত্যা করেছিলেন। দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। লাখ লাখ মানুষকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। তাদের নিজেদের কোনও দোষ ছিল না। সংবাদমাধ্যমকেও চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভারত সরকার প্রতি বছর ২৫শে জুন তারিখটা সংবিধান হত্যা দিবস হিসাবে পালন করা হবে প্রতি বছর। এই দিনটাতে স্মরণ করা হবে তাদের যারা ১৯৭৫ সালের জরুরী অবস্থার সময় অমানবিক যন্ত্রণাকে সহ্য করেছিলেন।' এদিকে এই নিয়ে মোদী লেখেন, '২৫শে জুন তারিখটা সংবিধান হত্যা দিবস হিসাবে পালন করা হবে। যখন সংবিধানকে হত্যা করা হয়েছিল তখন কী হয়েছিল সেটাই মনে করিয়ে দেওয়া হবে সেদিন। জরুরি অবস্থার সময় যারা সেই যন্ত্রণা ভোগ করেছিলেন তাঁদের প্রতিও সম্মান জানানো হবে এই দিনে। এই ইমার্জেন্সি হল ভারতের ইতিহাসে কংগ্রেসের তৈরি করা কালো অধ্য়ায়।'