অরুণাচলের তাওয়াঙে ভারত-চিন সংঘাতের আবহে আজও উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সংঘাতের ইস্যুতে আলোচনার দাবিতে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। তবে সেই দাবি মানেনি সরকার পক্ষ। এরপর বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়গে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের কাছে আবেদন করেন যাতে তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে আলোচনার অনুমোদন দেন। তবে এই দাবির প্রেক্ষিতে কংগ্রেসকে পালটা তোপ দাগেন রাজ্যসভার নেতা তথা বিজেপি সাংসদ পীযূষ গোয়াল। তিনি অভিযোগ করেন, কংগ্রেস জমানায় অনেক বিষয়তেই আলোচনার দাবি জানানো হলেও সেই দাবি মানা হত না।
এদিন সংসদে মল্লিকার্জুন খড়গে বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা আর কাজ করছে না। আমরা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে আলোচনার দাবি জানাচ্ছি। চিন সংক্রান্ত ইস্যুতে বিরোধীদের যাতে বলতে দেওয়া হয়, তার জন্য আমি আপনার (রাজ্যসভার চেয়ারম্যান) কাছে আবেদন জানাচ্ছি। চিন আমাদের মাতৃভূমিতে অনুপ্রবেশ করছে। আমাদের জমিতে তারা নিজেদের বাড়িঘর, কারখানা তৈরি করছে। যদি এই ইস্যু উত্থাপিত না হয়, তাহলে কোনও ইস্যু তুলে ধরা হবে?’
এরপর পীযূষ গোয়াল খড়গের এই আবেদনের বিরোধিতা করেন এবং দাবি করেন, এই দাবির মাধ্যমে কংগ্রেস সাংসদ নিজের মর্যাদা কমিয়ে দিচ্ছেন। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীনই প্রকাশ্যে আসে ভারত-চিন সংঘাতের খবর। এরপর থেকেই এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়েছে সংসদ। সংঘর্ষ নিয়ে বার বার আলোচনার দাবি তুলতে থাকেন বিরোধীরা। এই আবহে গত সপ্তাহেও একাধিকবার সংসদের অধিবেশন মুলতুবি হয়।
এর আগে অবশ্য এই ইস্যুতে সংসদের উভয় কক্ষে বিবৃতি পেশ করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সংসদে রাজনাথ সিং তাওয়াং সংঘাত নিয়ে বলেন, ‘আমি এই হাউসকে জানাতে চাই যে আমাদের কোনও সৈন্য এই সংঘর্ষে মারা যায়নি এবং কেউ গুরুতর জখম হয়নি। ভারতীয় সামরিক কমান্ডারদের সময়মত হস্তক্ষেপের কারণে পিএলএ সৈন্যরা তাদের জায়গায় ফিরে যায়। ঘটনার পরে এলাকার স্থানীয় কমান্ডার ১১ ডিসেম্বর চিনা প্রতিপক্ষের সঙ্গে একটি পতাকা বৈঠক করেন এবং ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা করেন। চিনা পক্ষকে এই ধরনের পদক্ষেপ করতে বারণ করা হয়েছে এবং সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে বলা হয়েছে। বিষয়টি চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়েও তোলা হয়েছে। আমি হাউসকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমাদের বাহিনী আমাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এর বিরুদ্ধে যে কোনও প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করতে সর্বদা প্রস্তুত। আমি নিশ্চিত এই হাউস আমাদের বাহিনীর বীরত্ব ও সাহসিকতার জন্য এক কণ্ঠের পক্ষে থাকবে।’ তবে রাজনাথের এই বক্তব্যে মন গলেনি বিরোধীদের। তাঁরা সরকারকে আরও প্রশ্ন করতে চায়। এই আবহে আপাতত সংসদ উত্তাল থাকবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।