জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় মানেই ধরনা, আন্দোলন। মাঝেমাঝেই আবার জেএনইউ থেকে হিংসার খবরও আসে। এই আবহে ক্যাম্পাসে শান্তি বজায় রাখতে কঠোর নিয়ম এনেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিয়মে বলা হয়েছিল, ধরনা, হিংসার মতো ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে সেই পড়ুয়াকে। তবে এই নির্দেশিকা জারি হতেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। অবশেষে বিতর্কে জল ঢালতে নির্দেশিকা প্রত্যাহার করল জেএনইউ কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঠিক রাখতে ছাত্রদের জন্য নয়া শৃঙ্খলা বিধি জারি করেছিল জেএইন কর্তৃপক্ষ। সদ্য বাতিল হওয়া বিধিতে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ধরনা দিলেই পড়ুয়াদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে পড়ুয়াকে। এদিকে কোনও পড়ুয়া যদি হিংসার সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তবে তাঁকে জরিমানার বাবদ দিতে হবে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এহেন পড়ুয়াকে বহিষ্কারও করা হতে পারে। কেড়ে নেওয়া হতে পারে তাঁর যাবতীয় শিক্ষাগত শংসাপত্র।
জেএনইউ কর্তৃপক্ষের এই বিজ্ঞপ্তিকে ‘তুঘলকী’ বলে তোপ দেগেছিল আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল এসএফআই, আইসার মতো বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলিও। এই আবহে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাবেলা এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হল কর্তৃপক্ষ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিবিসির বিতর্কিত ডকুমেন্টারি দেখানো নিয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল জেএনইউ। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতেই আন্দোলন দেখা গিয়েছে জেএনইউ-তে। এমনকি বেশ কিছু ঘটনায় রক্তও ঝরেছে বিগত দিনে। জেএনইউ-র বামমনস্ক পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দেশবিরোধী’ কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগও উঠেছে। এই আবহে ১৭টি ‘গুরুতর অপরাধে’র কথা উল্লেখ করে 'শাস্তি' নির্ধারণ করা হয়। জুয়াখেলা, ধরনা, অন্যায়ভাবে হস্টেল দখল করা, ক্যাম্পাসের ভিতরে অশালীন ভাষায় কথা বলা, যৌন হেনস্তা, ইভটিজিং, ব়্যাগিংয়ের মতো কার্যকলাপ রয়েছে এই 'অপরাধ'-এর তালিকায়।
এদিকে এই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তিশ্রী ডি পণ্ডিত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমি এমন সার্কুলার সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। আমি একটা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য হুবলিতে এসেছি। নথি প্রকাশের আগে প্রধান প্রক্টর আমার সঙ্গে পরামর্শ করেননি। আমি জানতাম না যে এই ধরনের নথির খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। আমি খবরের কাগজের মাধ্যমে এই বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। সেজন্যই আমি এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছি।'