এবার ওবিসি তালিকা বাতিল সংক্রান্ত আদালতের নয়া নির্দেশকে ঘিরে যে আলোচনা চলছে তাতে নতুন মাত্রা যোগ করল ন্যাশানাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস। ( এনসিবিসি)। সেই এনসিবিসির চেয়ারম্যান হংসরাজ গঙ্গারাম আহির এই রায়কে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই রায় অত্যন্ত ঠিক ও আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে পর্যালোচনা করার সময় দেখা গিয়েছিল ২০১০ সালের পরে অন্তত ৬৫টি মুসলিম ক্লাস ও ৬টি হিন্দু ক্লাসকে এই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে তিনি জানিয়েছেন, আমরা এনিয়ে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্য সরকার এনিয়ে কিছু দিতে চায়নি।
তিনি জানিয়েছেন, কর্ণাটকে মুসলিমদের ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর সেখানেও ঠিক একই রকম( কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের মতো) হতে চলেছে। তিনি জানিয়েছেন, আসল ওবিসিদের যে অধিকার সেটা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আমরাও চাই আসল ওবিসিরা যেন তাঁদের অধিকার পান। জানিয়েছেন এনএসবিসি।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের কপিতে বলা হয়েছিল, ‘এই আদালত মনে করছে যে মুসলিমদের ৭৭টি শ্রেণিকে অনগ্রসর বলে চিহ্নিত করার বিষয়টি সার্বিকভাবে পুরো সম্প্রদায়ের জন্য অপমানজনক। রাজনৈতিক স্বার্থে ওই সম্প্রদায়গুলিকে যে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়নি, তা নিয়ে আদালত যে সন্দেহ-মুক্ত, তা নয়। যে যে ঘটনার রেশ ধরে (ওই) ৭৭টি শ্রেণিকে ওবিসি তকমা দেওয়ার হয়েছিল, তা দেখে এটা স্পষ্ট যে (ওই শ্রেণিগুলিকে) ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল।’
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজনৈতিক স্বার্থে কোনও সম্প্রদায়ের কোনও শ্রেণিকে ওবিসি তকমা দেওয়ার ফে সংশ্লিষ্ট শ্রেণিকে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের দয়ায় চলতে হয়। সেই বিষয়টি (ওই শ্রেণিগুলিকে) অন্যান্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখতে পারে। তাই এই ধরনের সংরক্ষণের বিষয়টি সার্বিকভাবে ভারতের গণতন্ত্র এবং সংবিধানের পরিপন্থী।
এনিয়ে আগেই মুখ খুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০১০ সালের পরবর্তী সময়ে তৈরি হওয়া সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র (সার্টিফিকেট) কে বাতিল ঘোষণা করে বুধবার রায় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়কে স্বাগত জানিয়ে নরেন্দ্র মোদী তাঁর প্রচার মঞ্চ থেকে বলেছিলেন, ‘ কলকাতা হাইকোর্ট তার রায়ে ইন্ডি জোটকে জোরালো থাপ্পড় মেরেছে।’ মুসলিম তোষণ নিয়ে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে মোদী বলেন, ‘ এটা এই জন্য করা হয়েছে, কারণ পশ্চিমবঙ্গের সরকার মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের জন্য উল্টো পাল্টা মুসলিমদের ওবিসি বানাতে গিয়ে সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছে।’