একজন শিক্ষিত বিবাহিত স্ত্রী যিনি রোজগার করতে সক্ষম মেধা তথা অভিজ্ঞতা দিয়ে, তিনি কখনও শুধু বসে থাকতে পারেন না নিজের খরচ স্বামীর কাছে দাবি করে। এই পর্যবেক্ষণ ওড়িশা হাইকোর্টের। অর্থাৎ শিক্ষিত বিবাহিত স্ত্রী শুধুমাত্র বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে বলে স্বামীর কাছে খরপোষ চেয়ে বসে থাকবেন এটা ঠিক নয়। নিজেকে রোজগার করতে হবে। খোরপোষ নিশ্চয়ই পাবেন। তা বলে সেটাই একমাত্র রোজগারের পথ হতে পারে না। এটাই বোঝাতে চেয়েছে ওড়িশা হাইকোর্ট।
ওড়িশা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, একটি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা হয়। যেখানে স্বামীর উপর খোরপোষের মোটা টাকা দাবি করেন স্ত্রী। যদিও ওই স্ত্রী একাধারে শিক্ষিত, অভিজ্ঞ এবং অপরদিকে রোজগার করতে সক্ষম। সেখানে শুধু স্বামীর উপর বড় অঙ্কের টাকার দাবি তাও স্ত্রীর নিজের খরচ–খরচা চালানোর জন্য সেটা ঠিক মনে হয়নি আদালতের। বরং স্ত্রীর কি করণীয় সেটা মনে করিয়ে দিয়েছে আদালত। খোরপোষ পাবে না সেটা কখনও বলেনি আদালত। কিন্তু বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে বলেই স্বামীর উপর অর্থের বোঝা চাপিয়ে দিতে হবে সেটা ঠিক নয় বলে মনে করছে আদালত।
আরও পড়ুন: বীরভূমের বোমাবাজির ঘটনায় গ্রেফতার ১০, ক্লোজ করা হল কাঁকড়তলা থানার ওসিকে
যেখানে একজন বিবাহিত মহিলার শিক্ষা রয়েছে, অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং কর্মক্ষমতা রয়েছে সেখানে নিজের খরচের জন্য স্বামীর উপর বিপুল পরিমাণ টাকা অঙ্ক চাপিয়ে দেওয়া উচিত কাজ নয় বলে মনে করে আদালত। স্ত্রীর দাবি ছিল, স্বামীকে খরপোষ বাবদ ৮ হাজার টাকা দিতে হবে। কিন্তু আদালত সেই দাবি খারিজ করে দিয়ে জানিয়ে দেয় স্বামী দেবে ৫ হাজার টাকা। বাকিটা তাঁকে রোজগার করতে হবে। কারণ স্ত্রী শিক্ষিত এবং কাজের অভিজ্ঞতা আছে। তার উপর কর্মক্ষমতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে এমন দাবি উচিত নয়।
এই বিবাহবিচ্ছেদের মামলার শুনানিতে দু’পক্ষের বক্তব্য শোনেন বিচারপতি। ওড়িশা হাইকোর্টের বিচারপতি গৌরীশঙ্কর শতপথী বলেন, ‘আইন কখনও এটাকে সমর্থন করে না যে, একজন উচ্চশিক্ষিত স্ত্রী শুধু বসে থাকবেন আর স্বামীকে তার রক্ষণাবেক্ষণের খরচ জুগিয়ে যেতে হবে এটা ঠিক নয়। কোনও কাজ করবেন না বা কাজ করার চেষ্টা করবেন না স্ত্রী উচ্চশিক্ষা থাকার পরও সেটা উচিতও নয়। আইনের ১২৫ ধারায় বলা আছে যেসব স্ত্রী নিজেদের ভরণপোষণ জোগাড় করতে অক্ষম তাঁদের ক্ষেত্রে খোরপোষ বাবদ টাকা দাবি করা ঠিক। বিশেষ করে যাঁদের উপযুক্ত আয় নেই।’