করোনা আবহে বাড়তি আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে মিউকোরমাইকোসিস ওরফে ব্ল্যাক ফাংগাস। মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যে এই ফাংগাল সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার করোনা রোগী। এর প্রভাবেই প্রাণ হারিয়েছেন ৮ জন। মঙ্গলবার এমনটাই জানালেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপি।
ক্রমেই ভয়াবহ দিকে এগোচ্ছে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মিউকোরমাইকোসিস সংক্রমণ। ফলে সময় থাকতে ব্ল্যাক ফাংগাস আক্রান্ত করোনা রোগীদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ড তৈরী করা হচ্ছে বলে জানালেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিনি জানান, ' মিউকোরমাইকোসিস আক্রান্তদের বিনামূল্যে বিশেষ ওয়ার্ডে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ২ হাজার আক্রান্ত ও ৮ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে।'
চলতি সপ্তাহের সোমবারই এ বিষয়ে ঘোষণা করেছিলেন রাজেশ। তিনি জানান, মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলে জন আরোগ্য যোজনা প্রকল্পের অধীনে বিনামূল্যে বিশেষ চিকিত্সা হবে ব্ল্যাক ফাংগাস আক্রান্ত করোনা রোগীদের।
রাজ্যের ১ হাজার হাসপাতালে এই আওতায় বিনামূল্যে চিকিত্সা করা হবে বলে জানান তিনি।
বিশেষত ডায়াবেটিস আক্রান্ত করোনা রোগীদের মধ্যে এই সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি। ব্ল্যাক ফাংগাস সাধারণত ভেজা, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে বংশবৃদ্ধি করে। করোনা আক্রান্ত রোগী সেই ধরণের পরিবেশে থাকলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি।
ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডঃ মণীষ মুঞ্জল এই বিষয়ে বলেন, আমরা নতুন করে এই সংক্রমণ দেখতে পাচ্ছি। গত বছরও এই মারাত্মক সংক্রমণের জেরে অনেক রোগী প্রাণ হারিয়েছিলেন। এর জেরে চোয়াল, নাক শরীর থেকে সরাতে হতে পারে। রোগী দৃষ্টি শক্তি হারাতে পারেন।
করোনা আক্রান্ত রোগীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হলে অনেকক্ষেত্রে তাঁদের স্টেরয়েড প্রয়োগ করাতে হচ্ছে। সেই স্টেরয়েড রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে। কিছু ওষুধ রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরেও প্রভাব ফেলে। এই অবস্থায় ছত্রাকের সংক্রমণ বাড়ছে।
তাঁর কথায় করোনা থেকে সুস্থ হওয়া কোনও রোগীর যদি কোমর্বিডিটি থাকে, অর্থাৎ তাঁদের ডায়াবেটিস, কিডনি কিনবা হার্টের সমস্যা থাকে, ক্যান্সার প্রভৃতি সমস্যা থাকে তাঁদেরও এই ছত্রাক দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
এর কিছু লক্ষণ হল মাথা যন্ত্রণা, জ্বর, চোখের নিচে ব্যাথা, নাক বা সাইনাস বন্ধ হয়ে আসা, দৃষ্টিশক্তি বিলোপ।
ওড়িশায় প্রথম এক ৭১ বছর বয়সী ডায়াবেটিক করোনা রোগীর দেহে এর হদিশ মেলে। এরপর থেকে মহারাষ্ট্র ও গুজরাতেও করোনা রোগীদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাংগাসের খবর এসেছে।