উপরাষ্ট্রপতি পদে আসীন হওয়ার পর থেকেই বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন জগদীপ ধনখড়। শীর্ষ আদালতের একাধিক ‘ঐতিহাসিক রায়’কে সংসদীয় সার্বভৌমত্বের জন্য খারাপ নজির হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন ধনখড়। পাশাপাশি ধনখড় বলেছিলেন যে সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদই সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। তবে উপরাষ্ট্রপতি 'ভুল' বলেছেন বলে দাবি করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। এর আগে ধনখড় বলেনছিলেন, ১৯৭৩ সালে কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সংসদ বা বিধানসভার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি ২০১৫ সালে এনজেএসি আইন বাতিল করা নিয়েও ফের সরব হন ধনখড়। এই আবহে চিদাম্বরম এক টুইট বার্তায় বললেন, 'রাজ্যসভার মাননীয় চেয়ারম্যান ভুল বলেছেন। দেশের গণতন্ত্রে সর্বোচ্চ স্থান সংসদের নয় বরং সংবিধানের।' (আরও পড়ুন: মোদীর নীতি মেনে হজের ‘কোটা’ বাতিল, ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’ নিয়ে আক্রমণ কংগ্রেসকে)
নিজের যুক্তির পক্ষে উদাহরণ তুলে ধরে চিদাম্বরম লেখেন, 'সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য যদি সংসদীয় ব্যবস্থাকে রাষ্ট্রপতি পদ্ধতিতে রূপান্তর করার জন্য ভোট দিয়ে থাকে, অথবা সপ্তম তফসিলে থাকা রাজ্য তালিকা বাতিল করে দিয়ে রাজ্যগুলির থেকে এক তরফা ভাবে আইনি ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়, তাহলে কি এই ধরনের সংশোধনী বৈধ হবে?'
এদিকে ১৯৭৩ সালে কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রসঙ্গে ধনখড় বলেছিলেন, 'আমি ওই রায়ের সঙ্গে একমত নই। সংবিধানের মূল কাঠামোর কথা বলে সুপ্রিম কোর্ট একাধিক আইন খারিজ করে দিয়েছে। এতে সংসদের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করা হয়েছে। যে কোনও মূল কাঠামোর মূল হল মানুষের রায়। তাই সংসদ বা বিধানসভার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করা যায় না।' এই মন্তব্য করার আগে গত মঙ্গলবার ধনখড় অমিত শাহ এবং জেপি নড্ডার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন জগদীপ ধনখড়। তিনি কলেজিয়াম নিয়ে বলেছিলেন, 'বিচারপতি নিয়োগের নতুন ব্যবস্থা তৈরি করতে ঐতিহাসিক জাতীয় বিচারবিভাগীয় কমিশন বিল পাশ হয়েছিল লোকসভা ও রাজ্যসভায়। সুপ্রিম কোর্টের তরফে সেই বিল বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সংসদের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপসের একটি উদাহরণ ছিল সেটি। মানুষের রায়কে অস্বীকার করা হয় সেই রায়ের মাধ্যমে।' ধনখড়ের এই মন্তব্য নিয়ে সনিয়া গান্ধী সরব হয়েছিলেন। এবার নতুন করে বিচার বিভাগহকে নিশানা করেছেন ধনখড়। আর তাঁকে জবাব দিতে ময়দানে নামেন চিদাম্বরম।