২২ জুন আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সফরকালে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদী মার্কিন কংগ্রেসে দু'বার ভাষণ দেবেন এবং পঞ্চম বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এছাড়াও তাঁর সম্মানে স্টেট ডিনারেরও আয়োজন করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই আবহে মোদীকে বরণ করতে আমেরিকায় জোর প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু এরই মধ্যে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের গণতন্ত্র এবং মোদীকে নেতিবাচক প্রশ্ন করা হয় সম্প্রতি। যা নিয়ে আমেরিকায় তুমুল আলোচনা চলছে। মোদীর নেতৃত্বে ভারতের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সেই প্রশ্ন করেছিলেন আসমা খালিদ নামক এক সাংবাদিক।
আসমার প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্তা বলেছিলেন, 'ভারত একটি প্রাণবন্ত গণতন্ত্র এবং কারও সন্দেহ থাকলে তারা নয়াদিল্লিতে গিয়ে দেখতে পারেন।' এরপরই মানুষের মনে আগ্রহ যাগে এই প্রশ্নকারী সাংবাদিক আসমা খালিদকে নিয়ে। জানা গিয়েছে, আসমা খালিদ আমেরিকার ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর সাথে যুক্ত এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলো কভার করেন। আসমা খালিদ ২০১৪, ২০১৬, ২০১৮ এবং ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচন (প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং মিডটার্ম নির্বাচন) কভার করেছেন। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত আসমা খালিদ প্রায়শই মুসলিমদের সাথে সম্পর্কিত বিষয় উত্থাপন করেন। তিনি সবসময়ই হিজাব পরেন। আমেরিকাতে হিজাবের ব্যাপারে বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। আমেরিকা ছাড়াও তিনি পাকিস্তান, যুক্তরাজ্য এবং চিনেও রিপোর্টিং করেছেন। আমেরিকার ইন্ডিয়ানা প্রদেশে বসবাসকারী আসমা খালিদের মা ও বাবা দুজনেই পাকিস্তান থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক হওয়া আসমা খালিদ বিবিসিতে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে তাঁর সাংবাদিকতার জীবন শুরু হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে কৌশলগত সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা এনএনসি কোঅর্ডিনেটর জন কার্বিকে আসমা প্রশ্ন করেন, 'মোদীর অধীনে ভারতের গণতন্ত্রের হাল নিয়ে বাইডেন প্রশাসন চিন্তিত?' জবাবে জন কার্বি বলেন, 'ভারত একটা উজ্জীবিত গণতন্ত্র। যারাই দিল্লি গিয়েছেন, তারা সেটা দেখেছেন। এবং নিশ্চিত ভাবেই আমি আশা করছি, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও শক্তিশালী করা নিয়ে আলোচনা হবে। আর আমাদের কোনও উদ্বেগ থাকলে তা আমরা তুলে ধরি। বন্ধুদের সঙ্গে তো সেটা করাই যায়।' এদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কেন 'স্টেট ভিজিটে' আমন্ত্রণ জানানো হল? এই প্রশ্নের জবাবে জন কার্বি বলেন, 'বর্তমানে ডিফেন্স সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন ভারতে আছেন। সেখানে তিনি দুই দেশের মধ্যকার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সহযোগিতা বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন। আমাদের দু'দেশের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বাণিজ্যিক লেনদেন হয়। ভারত আমাদের বন্ধু এবং আমাদের সহযোগী। ভারত কোয়াডের সদস্য। আমি আরও বলতে থাকতে পারি। অজস্র কারণ আছে, যার জন্য আমেরিকার কছে ভারতের মূল্য রয়েছে। শুধু দ্বিপাক্ষিক নয় বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রেও ভারতের দাম রয়েছে। এবং তাই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে এই সব বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।'