পারস্পরিক সম্মান প্রদর্শন ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রক্ষায় বিশ্বাসী পাকিস্তান, এবং সব দিকে শান্তির হাত বাড়িয়ে দেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। মঙ্গলবার এমনই চমকে দেওয়া মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের সেনাধ্যক্ষ জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া।
বরাবরই ভারতের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব পাক সেনাধ্যক্ষের এই মন্তব্য দিল্লিকে উদ্দেশ্য করে, এমনই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে ভারতীয় বায়ুসেনার আক্রমণ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে বাজওয়ার লাগাতার ভারত বিদ্বেষী প্রচার সুবিদিত।
এ দিন পাকিস্তান বায়ুসেনা ক্যাডেটদের স্নাতক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন বাজওয়া। সামরিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের উৎসবে তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান ও ভারতের উচিত শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক ভাবে দীর্ঘমেয়াদী জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করা, কারণ সেখানকার বাসিন্দারাও তাই চান।’
পাক সেনাপ্রধানেোর মন্তব্যে অবশ্য এখনও পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া জানায়নি নয়াদিল্লি। ভারতের সন্ত্রাসদমন বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, জেনারেল বাজওয়ার মন্তব্য সম্পর্কে এখনই কিছু বলা উচিত হবে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে যে, এই মন্তব্য বিক্শিপ্ত না কি ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের ইঙ্গিত।’
যে উদ্দেশেই এই মন্তব্য করে থাকুন পাক সেনাপ্রধান, দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে নষ্ট হওয়া সম্পর্ক মেরামত করতে শুধুকথায় চিড়ে ভিজবে না, জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। তাঁর মতে, নিজের জমিতে ঘাঁটি গেড়ে বসা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি বিনষ্ট করতে গঠনমূলক পদক্ষেপ করতে হবে ইসলামাবাদকে। নয়া দিল্লির বিশ্বাস অর্জন করতে সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি অবিলম্বে সমর্থন বন্ধ করা উচিত পাকিস্তানের।
পাকিস্তানের বর্তমান সরকারকে গদিচ্যূত করতে সে দেশের বিরোধী জোটের লাগাতার তোপের মুখে পড়ে সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণাত্মক মন্তব্য করা থেকে কিছুটা হলেও সরে দাঁড়িয়েছেন পাক সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পাকিস্তান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, তাঁর শাসনকালের প্রথম পাঁচ বছরে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তার পরেও সীমান্ত নিয়ে ভারতকে নিরন্তর উত্যক্ত করেছে পাক প্রশাসন ও সেনা। মোদীর স্বতঃপ্রণোদিত পাক সফরের পরেই ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে পাঠানকোটে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে আঘাতহানে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা।
নাশকতার কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যাতে প্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য ইসলামাবাদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে শান্তি প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত করতে জইশ-ই-মহম্মদ এর মতো জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে উদ্যোগী হয় ভারত। কিন্তু প্রততিশ্রুতি অনুযায়ী তাতে অংশগ্রহণ করতে সম্মত হয়নি ইমরান খানের সরকার।