সৌদি আরবের মেজাজ ঠান্ডা করতে ইমরান খান সরকারের উদ্যোগে গতি আনতে আগামী সপ্তাহে রিয়াধ উড়ে যাচ্ছেন পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার আহমেদ বাজওয়া। এর আগে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির হুমকির জেরে ইসলামাবাদের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কে ফাটল ধরে।
গত সপ্তাহে টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে কাশ্মীর ইস্যুতে সৌদি নেতৃত্বাধীন অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কনফারেন্স-এর (ওআইসি) বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া নিয়ে রিয়াধের নীরবতায় বিরক্ত পাক বিদেশমন্ত্রী জানান, ‘আপনারা যদি বৈঠক ডাকতে অপারগ হন, সে ক্ষেত্রে আমি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে বলে আমাদের সমর্থক ইসলামিক রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে বৈঠকের ব্যবস্থা করতে বাধ্য হব।’
পরে কুরেশির মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে পাক বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্য আন্তর্জাতিক কূটনীতির পরিপন্থী বলে মানা হয়নি। তবে কুরেশি নিজে পরে দুই বার তাঁর মন্তব্য ব্যখ্যা করতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেও বাতিল করে দেন।
এ দিকে পাক বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্যের পরেই সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে ইসলামাবাদের। তার জেরে পাকিস্তানকে দেওয়া আর্থিক ঋণ এবং তেলের দামে ছাড়ের সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন দেখা দিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে পাকিস্তানকে ঘোষিত ১০০ কোটি ডলার ঋণ প্রত্যাহার করে নিয়েছে সৌদি প্রশাসন। আর তাতেই প্রমাদ গুনেছে ইমরান খান সরকার।
জেনারেল বাজওয়ার আসন্ন সৌদি সফর নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও গত সোমবার তিনি ইসলামাবাদে সৌদি রাষ্ট্রদূত অ্যাডমিরাল নওয়াফ বি সইদ আরল-মালিকির সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। পরে তিনি জানিয়েছেন, ‘পারস্পরিক আগ্রহের বিষয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষাজনিত সম্পর্ক’ নিয়ে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে।
রিয়াধ সফরের আগে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে পাক সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ ফলপ্রসূ হতে পারে বলে আশায় রয়েছে ইসলামাবাদ। যদিও সদ্য ১০০ কোটি ডলার সৌদি ঋণ শুধতে গিয়ে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে ধুঁকতে থাকা পাক অর্থনীতি। রিয়াধের ঋণ শুধতে বাধ্য হয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু চিনের কাজে হাত পাততে হয়েছে পাকিস্তানকে। এ বাদে সৌদির সঙ্গে পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী আরও ৩০০ কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতির ভবিষ্যৎ এবং গত মে মাসে শেষ হয়ে যাওয়া বাকিতে জ্বালানি কেনার চুক্তি পুনর্নবীকরণে রিয়াধের অনাগ্রহও অস্বস্তিতে ফেলেছে ইমরান খান সরকারকে।