'বন্ধুর ছদ্মবেশে থাকা শত্রু'দের চিহ্নিত করে তাদের নিকেশ করার বার্তা দিলেন পড়শি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। তাঁর দাবি, এই 'বন্ধুর ছদ্মবেশে থাকা শত্রু'রাই সন্ত্রাসবাদীদের হয়ে 'প্রক্সি' দিচ্ছে! এবং তারাই পাকিস্তাকে নিশানা করছে।
শনিবার কোয়েট্টা সফরে গিয়ে একথা বলেন পাাক সেনাপ্রধান। তার ঠিক আগেই জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ যায় ১৮ জন পাক সেনার। সেই ঘটনা ঘটে বালোচিস্তানের কালাত জেলায়। এই সংঘাতে ২৩ জন জঙ্গিকেও নিকেশ করা হয় বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।
পাক সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, সেনাপ্রধান তাঁর সফরে বালোচিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশাবলী দেন। এই এলাকায় যাতে আইন-শৃঙ্খলা এবং শান্তি বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন সেনাপ্রধান।
এই সংঘাত ও একসঙ্গে এত জন সেনার অপমৃত্যুর ঘটনায় শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করে পাক সেনাপ্রধান বলেন, 'যারা তাদের ভিনদেশি প্রভুদের কথা মতো সন্ত্রাসবাদীদের হয়ে প্রক্সি দিচ্ছে, যারা পরস্পরবিরোধী দুই সত্ত্বা ধরে রাখতে অত্যন্ত দক্ষ, এবং যারা এখানে অশান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের আমরা ভালো করেই চিনি।'
'বন্ধুর মুখোশ পরে থাকা এই শত্রুরা যতই যা করুক না কেন, আমাদের গর্বিত রাষ্ট্র এবং দেশের সশস্ত্র বাহিনীর কাছে তাদের পরাজয় স্বীকার করতেই হবে ইনসআল্লাহ। আমাদের মাতৃভূমি এবং এখানকার মানুষের নিরাপত্তার জন্য আমরা অবশ্যই এর প্রতিশোধ নেব এবং সেই শত্রুদের নিকেশ করব। যখন, যেখানে সেটা করার প্রয়োজন হবে, করব।'
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানে নানা অঘটন ঘটিয়ে চলেছে দু'টি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। যথাক্রমে - তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান এবং বালোচপন্থী জাতীয়তাবাদীরা।
তথ্য বলছে, এই দুই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের 'লড়াই'য়ের উদ্দেশ্য ভিন্ন। একদিকে, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি-র লক্ষ্য হল, আফগানিস্তানের মতোই পাকিস্তানেও ইসলামি শাসন কায়েম করা।
অন্যদিকে, বালোচপন্থী জাতীয়তাবাদীদের দাবি, বর্তমান সরকার বালোচিস্তানের মানুষের সঙ্গে অনাচার ও অত্য়াচার করছে। তাই, তারা এর থেকে বালোচিস্তানের মানুষকে 'মুক্তি' দিতে চায়। এই চরমপন্থীদের অভিযোগ, পাকিস্তানের সরকার বালোচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করে স্থানীয় বাসিন্দাদের অধিকার লুণ্ঠন করতে চাইছে।
পাক আধিকারিকরা মাঝেমধ্যেই অভিযোগ করেন, এই সব জঙ্গি সংগঠন ও চরমপন্থীদের বাড়বাড়ন্তের নেপথ্য়ে রয়েছে বিদেশি শক্তি। সেই শক্তির অঙ্গুলি হেলনেই 'বন্ধুর ছদ্মবেশে থাকা শত্রু'রা পাকিস্তানের মাটিতে অরাজকতা ছড়াচ্ছে বলে মনে করছেন পাক সেনাপ্রধান। এই ছদ্মবেশীরা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।