নিজেরাই নিজেদের জয়ী ঘোষণা করে দিয়ে শেহবাজ শরিফকে পাকিস্তানের ‘ক্যাপ্টেন’ বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করে দিল বিরোধীরা।
ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই মাঠে ‘দর্শক’ ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন ইমরান খান। তাতে ম্যাচ ভন্ডুল হয়ে গেলেও বিপক্ষ দল পিছিয়ে থাকল না। নিজেরাই নিজেদের জয়ী ঘোষণা করে দিয়ে শেহবাজ শরিফকে পাকিস্তানের ‘ক্যাপ্টেন’ বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিল বিরোধীরা। সেইসঙ্গে পুরো বিষয়টি নিয়ে আপাতত সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হচ্ছে।
ইমরানের সরকারের বিরুদ্ধে যে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল, তা রবিবার খারিজ করে দেন পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। তারপর নিজেরাই সংসদে অধিবেশন শুরু করেন বিরোধী নেতারা। অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয় জাতীয় সংসদের বিরোধী দলনেতা শেহবাজকে। একটি ভিডিয়ো টুইট করে পাকিস্তান পিপলস পার্টির শেরি রেহমান দাবি করেন, আয়াজ সাদিককে নয়া স্পিকার হিসেবে বেছে নিয়েছেন ১৯৭ জন সাংসদ।
197 opposition members by counting via Division excluding Ayaz Sadiq https://t.co/Nh0WT5uHbd
এমনিতে শেষ মুহূর্তের ‘রিভার্স সুইংয়ে’ রবিবার ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেন পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার। তারপরেই ইমরান বলেন, 'সংসদ ভেঙে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখেছি আমি। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন হওয়া উচিত। আমি পাকিস্তানের মানুষকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আর্জি জানাচ্ছি।' সেইসঙ্গে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেওয়ায় ডেপুটি স্পিকারের প্রশংসা করেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা (এবং) বিদেশি ষড়যন্ত্রকে খারিজ করে দিয়েছেন (ডেপুটি স্পিকার)।’
অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল কেন?
গত কয়েকদিন ধরে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট নিয়ে চূড়ান্ত নাটক চলেছে। একাধিকবার সংসদ মুলতুবি হওয়ার পর রবিবার ফের অধিবেশন শুরু হয়। ইমরান সরকারের মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী দাবি করেন, সরকারকে উৎখাত করতে বিদেশি শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। গত ৭ মার্চ পাকিস্তানের দূতকে একটি বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাতে একাধিক দেশের প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল যে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে। তাই অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধানের পাঁচ নম্বর ধারা নম্বর লঙ্ঘন করছে বলে দাবি করেন ইমরান সরকারের মন্ত্রী।
ফাওয়াদের সেই যুক্তি মেনে নেন ডেপুটি স্পিকার। ইমরান সরকারকে কার্যত বাঁচিয়ে দেন। পাকিস্তানের সংবিধানের পাঁচ নম্বর ধারা (রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখা প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক কর্তব্য) লঙ্ঘনের যুক্তি দেখিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেন তিনি। তিনি জানান, ৮ মার্চ যে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল, তা আইন এবং সংবিধান মোতাবেক হওয়া উচিত। ‘ষড়যন্ত্র করে কোনও নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেব বিদেশি শক্তি, সেটার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।’ ফাওয়াদ যে যুক্তি দিয়েছেন, তা ‘বৈধ’।