রেজাউল এইচ লস্কর
আগ বাড়িয়ে রীতিমতো বিবৃতি জারি করে দিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু সরকারিভাবে ইসলামিক দেশগুলির সংগঠনের (অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন বা ওআইসি) তরফে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হল, তাতে বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকের কর্মসূচি কাশ্মীর ইস্যুকে রাখা হল না। যা আগামী শুক্রবার এবং শনিবার নাইজারে হবে। ফলে তাতে লাভ তো কিছুই হল না, উলটে আন্তর্জাতিক মহলে মুখ পুড়ল ইমরান খানদের।
বুধবার ইমরানের প্রশাসনের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, দু'দিনের বৈঠকে যোগ দেবেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। একইসঙ্গে তাতে দাবি করা হয়, ‘জম্মু ও কাশ্মীর বিতর্ক’-সহ মুসলিম দুনিয়া যে বিভিন্ন বিষয়গুলির সম্মুখীন হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। গত বছরের অগস্টে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহারের পর জম্মু ও কাশ্মীরের ‘ক্রমহ্রাসমান মানবাধিকার এবং মানবিক পরিস্থিতি’-র বিষয়টিও কুরেশি তুলে ধরবেন বলে জানানো হয়।
কিন্তু ওআইসির ইংরেজি ও আরবি বিবৃতির কোথাও কাশ্মীরের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হয়নি। সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ইউসেফ আল-ওথাইমিনকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, ‘শান্তি এবং উন্নয়নের জন্য সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ’ হওয়ার থিমের উপর এবার বৈঠক হবে। কর্মসূচির মধ্যে আছে ‘মুসলিম দুনিয়ার উদ্বেগের বিভিন্ন বিষয়’। আরবি বিবৃতিতেও একবারের জন্যও কাশ্মীর প্রসঙ্গ তোলা হয়নি।
তবে তাতে একেবারেই অবাক নয় কূটনৈতিক মহল। কারণ ৫৬ সদস্যবিশিষ্ট ওআইসির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য - সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কে চোনা প়ড়েছে। কাশ্মীর ইস্যুতে রিয়াধের অবস্থানের সমালোচনায় করায় ইমরানের সরকারকে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ আগেভাগে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সৌদি আরব। ২০১৮ সালে ইসলামাবাদকে সেই ঋণ দিয়েছিল রিয়াধ।
সেই ধাক্কার পর তুরস্ক এবং মালয়েশিয়ার সঙ্গে ইসলামিক দেশগুলির নয়া জোট গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু তাতেও সফল হননি। তারইমধ্যে বুধবার নিরাপত্তাজনিত কারণে সাময়িকভাবে পাকিস্তান, আফিগানিস্তান-সহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে পাকিস্তানের দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
একদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে দু'দেশের সম্পর্ক ধাক্কা খেয়েছে, সেই সময় গত বছর ধরে ক্রমাগত পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছে ভারত। তার ফলস্বরূপ ওআইসির বিদেশমন্ত্রীদের প্লেনারি সেশনে ‘গেস্ট অফ ইনার’ হিসেবে ডাকা হয়েছিল তত্কালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে। তা নিয়ে ফোঁস করেছিল পাকিস্তান।