গদি বাঁচানোর শেষ চেষ্টায় ইমরান খান সব বলেই চালিয়ে খেলতে চাইছেন। ‘বিদেশি শক্তি’র বিরুদ্ধে তাঁর সরকার ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে শুরু করে ভারতের বিদেশ নীতির ‘প্রশংসা’, সবটাই শোনা গিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রীর মুখে। এই আবহে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ হয়ে গিয়েছে। আগামী ৩ এপ্রিলের মধ্যে আস্থা ভোট হবে পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে। এর আগেই জনগণের কাছে নিজের ‘বার্তা’ পৌঁছে দিতে মরিয়া। পাকিস্তানি অ্যাসেম্বলিতে নম্বর নেই ইমরানের কাছে। আর তাই আম জনতার ‘সমর্থন’ বাড়াতে চাইছেন ইমরান। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমরান খান। এই ভাষণ তাঁর দেওয়ার কথা ছিল বুধবারই। তবে পাক মিডিয়ার একাংশের দাবি, ‘পাক সেনা প্রধানের পরামর্শে ভাষণ পিছিয়ে দেন ইমরান।’ তবে কারণ যাই হয়ে থাকুক না কেন গতকাল তাঁর ভাষণে ইমরান ভারতের সাথে সম্পর্ক ভালো করার ইঙ্গিত দেন। পাশাপাশি ভারতের পথ অনুসরণ করে ‘স্বাধীন বিদেশ নীতি’র পক্ষে সওয়াল করেন।
শুক্রবার ইমরান বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমার বিদেশ নীতি স্বাধীন হবে। এরকম স্বাধীন বিদেশ নীতি হবে যা পাকিস্তানিদের জন্য। এর অর্থ এই না যে আমরা কারোর শত্রু। এটার অর্থ এই না যে আমরা আমেরিকা বিরোধী হব, ভারত বিরোধী হব বা ইউরোপ বিরোধী হব।’ এদিন বিরোধীদের মীরজাফর ও মীর সাদিকের সঙ্গে তুলনা করে ইমরান খান বলেন, ‘মীরজাফর এবং মীর সাদিক কারা ছিলেন? তিনি মীরজাফর ইংরেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলা দখল করেছিলেন। ইংরেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিরাজদৌল্লাকে মেরে দিয়েছিলেন। নিজের স্বার্থের জন্য নিজের সম্প্রদায়ের মানুষকে পরাধীন করে তুলেছিলেন। আর মীর সাদিক ইংরেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে টিপু সুলতানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন।’
এদিকে এদিন তিনি প্রায় মখ ফসকে বলেই ফেলছিলেন যে আমেরিকাই তাঁর সরকারের পতনের নেপথ্যে আছে। এর আগেও এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন ইমরান। তবে সরাসরি আমেরিকার নাম তিনি নেননি। তবে এদিন আমেরিকার নাম নিয়েও পরে তিনি নিজেকে সামলে নেন। এদিন ইমরান বলেন, ‘আমেরিকা…ওহ, না, আমেরিকা নয়। একটা অন্য দেশ হুমকি চিঠ পাঠিয়েছে। যে দেশের নাম আমি করতে পারব না। আমি বোঝাতে চেয়েছি যে বিদেশ থেকে আমরা একটি বার্তা পেয়েছি। ওই দেশ হুমকি দিয়েছে যে যদি ইমরানের সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকে, তাহলে পাকিস্তানকে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে। দেশকে নিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে। দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে। ২০-২৫ কোটি টাকা দিয়ে বিদ্রোহীদের কেনা হয়েছে। তাতে দেশের যুব সমাজের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে।’