বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি সুপ্রিমো খালেদা জিয়াকে চিঠি পাঠালেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। রবিবার সংবাদমাধ্যমকে (২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) একথা জানিয়েছেন বিএনপি-র মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খান।
শায়রুল জানান, এদিন বিকেলে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ওই চিঠি এসে পৌঁছয়। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের তরফ থেকে সেই চিঠি বিএনপি চেয়ারপার্সনের দফতরে পাঠিয়ে দেয় পাক দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।
ওই চিঠিতে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শেহবাজ শরিফ। পাশাপাশি, প্রবীণ নেত্রী যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, চিঠিতে সেই প্রার্থনাও করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেই অনুসারে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পক্ষ থেকে এই চিঠি লেখা হয়েছিল গত ৩১ জানুয়ারি।
চিঠিতে সরাসরি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে পাক প্রধানমন্ত্রী লেখেন, 'আমি আপনার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার কথা সম্পর্কে জানতে পেরে উদ্বিগ্ন।'
চিঠিতে খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানিয়েছেন শেহবাজ শরিফ। তিনি লিখেছেন, 'আমি আপনার সুস্বাস্থ্য এবং মঙ্গল কামনা করি। সর্বশক্তিমান আল্লাহ আপনাকে সমস্ত ধরনের অসুস্থতা থেকে রক্ষা করুন এবং আপনাকে সুস্বাস্থ্য প্রদান করুন।'
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন থেকেই স্পষ্ট, এই চিঠিতে রাজনৈতিক বার্তাও দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে শেহবাজ শরিফ লিখেছেন, পাকিস্তান (রাষ্ট্রশক্তি) বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং তাঁর পরিবারের পাশে রয়েছে। এমনকী, তারা যে রাজনৈতিক দল বিএনপি-কেও পূর্ণ সমর্থন করছে, তা নিয়েও কোনও লুকোছাপা করেননি পাক প্রধানমন্ত্রী। চিঠিতে সবরকমভাবে খালেদা জিয়াকে আশ্বস্ত থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক নেত্রী খালেদা জিয়ার ভাবমূর্তিও মহিমান্বিত করার চেষ্টা করেছেন শেহবাজ শরিফ। তাঁর পাঠানো চিঠিতে তিনি লিখেছেন, 'আপনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক বিরাট ব্যক্তিত্ব। জনসেবার প্রতি আপনার অবিচল প্রতিশ্রুতি অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছে।'
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্য়ে সখ্য বেড়েছে। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, পাকিস্তান একদিকে যেমন মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখছে, আবার বিএনপি-র সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করছে।
এদিকে, খালেদা জিয়ার বিএনপি হোক, কিংবা ইউনুসের কেয়ারটেকার সরকার, দুই পক্ষই হাসিনা পরবর্তী সময়ে ভারতের সঙ্গে চরম শত্রুর মতো আচরণ শুরু করেছে। এই প্রেক্ষাপটে অসুস্থ বিএনপি নেত্রীর সুস্থতা কামনা করে পাক প্রধানমন্ত্রীর এই চিঠি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।