বিমান থেকে নামতে গিয়ে বিপদ ঘটিয়ে বসলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। ভাঙল তাঁর পায়ের পাতার হাড়। ঘটনাটি ঘটে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, বুধবার বিকেলে দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরই বিমান থেকে নামার সময় পায়ের পাতার হাড় ভাঙে জারদারির। কিন্তু, তাঁর কার্যালয়ের তরফে তখনই এই বিষয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
পরবর্তীতে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বুধবার রাতের ওই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেয় জারদারির অফিস।
পাক প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বুধবার রাতে বিমান থেকে নামার সময় পড়ে যান জারদারি। তার জেরেই তাঁর পায়ের পাতার হাড় ভেঙে যায়।
এই ঘটনার পরই আসিফ আলি জারদারিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে পরীক্ষা করে হাড় ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং পায়ের পাতার আঘাতপ্রাপ্ত অংশে প্লাস্টার করেন দেন।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের দফতরের তরফে প্রকাশ করা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জারদারির পায়ের পাতায় ওই প্লাস্টার চার সপ্তাহ থাকবে।
বুধবার রাতের ওই ঘটনার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে জারদারিকে তাঁর বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এবং চিকিৎসকরা আগামী চার সপ্তাহ তাঁকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলেছেন।
পাকিস্তানের দৈনিক সংবাদপত্র 'দ্য ডন'-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬৯ বছর বয়সী জারদারির শরীর স্বাস্থ্য গত কয়েক বছর ধরেই খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। তাঁর শরীরে বিভিন্ন সময়ে নানা সমস্যা ধরা পড়েছে।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে তাঁর চোখে অস্ত্রোপচার করাতে হয়। সেই অপারেশন হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে।
তারও আগে, ২০২২ সালে প্রায় এক সপ্তাহ করাচির ডা. জিয়াউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁর বুকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তার চিকিৎসা করাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রবীণ রাষ্ট্রনেতাকে।
জারদারির শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে নানা মহলে চর্চা শুরু হলেও সেসব উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ঘনিষ্ঠ সহযোগী ডা. আসিম হুসেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ডা. হুসেন লিখেছেন, আসিফ আলি জারদারি একেবারেই সুস্থ রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জুলাই মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন জারদারি। সেই সময় তাঁর ছেলে তথা পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি জানান, তাঁর বাবার শরীরে সংক্রমণের মৃদু উপসর্গ রয়েছে।
সেই ঘটনার প্রায় এক বছর আগেও আসিফ আলি জারদারিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেশ কিছু দিন ভর্তি রাখতে হয়েছিল। কী কারণে তাঁকে সেবার হাসপাতালে যেতে হয়েছিল, সেটা স্পষ্ট নয়।
যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অতিরিক্ত ভ্রমণের ফলে জারদারি 'পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি'তে ভুগছিলেন। তাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল।