বেহাল দশা পাকিস্তানের জ্বালানি তেলের ভান্ডারের। সেদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পাকিস্তানের ট্রেন চালানোর মতো আর মাত্র ৩ দিনের তেল মজুত আছে। সেটি শেষ হলেই থেমে যাবে পাকিস্তান রেলের চাকা! চরম দুর্দশায় পড়বেন পাকিস্তানবাসী। থেমে যাবে পণ্য, শিল্প পরিবহনও।
পাকিস্তানের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম ডন-এ এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে এই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন খোদ পাকিস্তান রেলের এক আধিকারিক। আরও পড়ুন: প্লাস্টিকের বেলুনে গ্যাস ভরে রান্না পাকিস্তানে, ঠিক যেন চলমান বোমা
পাকিস্তান রেলের ওই আধিকারিক এই বিষয়ে রেলমন্ত্রী খাজা সাদ রফিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তাঁকে দ্রুত এই বিষয়ের সমাধান করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, 'আপনি যদি এখনই রেলের এই পরিস্থিতির দিকে নজর না দেন, তাহলে অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে যাবে।' তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই অনেক পণ্যবাহী ট্রেন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান রেল। রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, করাচি ও লাহোরে বেশ কয়েকটি এমন মালবাহী ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। সম্পূর্ণভাবেই এটি জ্বালানির অভাবের কারণে করা হচ্ছে। অবস্থা যে কতটা খারাপ, এই ঘটনা থেকেই সুস্পষ্ট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এর রেল আধিকারিক বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এমন অবস্থা। খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা না হলে রেল দেউলিয়া হয়ে যাবে।
নেই বেতনও!
ডন-এর প্রতিবেদনে ওই রেল আধিকারিক জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্রত কর্মীদের গ্র্যাচুইটি প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত টাকাও নেই রেলের কাছে। অবসরপ্রাপ্তদের কথা তো দূরের ব্যাপার, সাধারণ কর্মীদেরই মাসিক বেতনের টাকা নেই রেলের অধিদফতরের কাছে। আগে যাঁরা নিয়মিত মাসের ১ তারিখেই বেতন পেতেন, তাঁরাই এখন ১৫-২০ তারিখে টাকা পাচ্ছেন।
বেতন না দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ চালকরা
গত ডিসেম্বরে ২০ তারিখ পর্যন্ত বেতনই পাননি বহু রেল চালক। এমন অবস্থায় তাঁরা দেশজুড়ে কর্মবিরতির ডাক দেন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তাঁদের বেতন মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় সরকার। সেটিও করা হয় দুইটি কিস্তিতে। এরপর অবশ্য আন্দোলন স্থগিত করেন রেল চালকরা। আরও পড়ুন: খোলা স্টেডিয়ামে বসে পুলিশ নিয়োগের পরীক্ষা দিলেন ৩২ হাজার! অবাক দৃশ্য পাকিস্তানে
পাকিস্তান রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০১৭-১৮ পর্যন্ত রেলের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল। সেই সময়ে মালবাহী রেল রেকর্ড আয়ও করছিল। কিন্তু তারপর থেকে ক্রমেই রেলের অবনতি হয়েছে। সমগ্র পাকিস্তানজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে অর্থনৈতিক পতন হয়েছে। আর তার ভাগীদার হয়েছে পাকিস্তান রেলও। আর পুরো বিষয়টার ভুক্তভোগী সেখানকার আমজনতা।