ভারতের সেনাপ্রধানের উপর বেজায় চটেছে পড়শি পাকিস্তান। সম্প্রতি ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সরাসরি বলেছিলেন, ভারতে সীমান্ত পেরিয়ে যেসব সন্ত্রাসবাদী ঢুকছে, তাদের অধিকাংশই পাকিস্তানি। পাকিস্তানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে কার্যত সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।
ভারতীয় সেনাপ্রধানের সেই গুরুতর অভিযোগকেই এবার 'চূড়ান্ত ভণ্ডামীর ঐতিহ্যশালী নিদর্শন' বলে তোপ দাগল পাকিস্তান।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা 'ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন' (আইএসপিআর)-এর পক্ষ থেকে এই প্রসঙ্গে বলা হয়, 'ভারতের সেনাপ্রধান পাকিস্তানকে নিশানা করছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান নাকি সন্ত্রাসবাদের এপিসেন্টার। কিন্তু, তাঁর এই মন্তব্য একেবারেই বাস্তববিরোধী। শুধু তাই নয়। এটা আসলে ভারতের নিজের ব্যর্থতা ঢাকারই একটা অপচেষ্টা। তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলির জন্য পাকিস্তানকে দোষ দেওয়া আসলে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় চালানো নৃশংসতা।'
উল্লেখ্য, গত সোমবার জেনারেল দ্বিবেদী বলেছিলেন, গত বছর ভারতের নিরাপত্তাবাহিনী মোট যত পরিমাণ জঙ্গিকে নিকেশ করেছে, তার প্রায় ৬০ শতাংশই পাকিস্তানি। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে জম্মু ও কাশ্মীরে যে সন্ত্রাবাদীরা রয়েছে, তাদের মধ্যেও প্রায় ৮০ শতাংশ পাকিস্তান থেকেই এসেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে পালাবদল ঘটেছে। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন কেয়াারটেকার সরকার ভারতকে কার্যত শত্রু ঘোষণা করে পাকিস্তানের সঙ্গে মাখো মাখো সম্পর্ক তৈরি করতে চাইছে।
সেই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ওই দুই দেশের সেনাবাহিনীর আধিকারিকরা বৈঠকে বসেন। রাওয়ালপিন্ডিতে তাদের সেই বৈঠক হয়। উদ্দেশ্য, দুই দেশের মধ্যে সামরিক সমন্বয় ও সামরিক আদান-প্রদান বৃদ্ধি।
সেই প্রেক্ষাপটে ভারতের সেনাপ্রধান গত সোমবার পাকিস্তানের জঙ্গিবাদে মদত দেওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্তব্যগুলি করেন।
কিন্তু, আইএসপিআর ভারতের সেনাপ্রধানের সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, 'ভারত জম্মু ও কাশ্মীরে যে নৃশংসতা চালাচ্ছে, তার থেকে যাতে বাকি বিশ্বের নজর ঘোরাতে পারে, তার জন্যই এই ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে।' ভারতে সর্বত্র সংখ্যালঘুদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে বলেও আইএসপিআর-এর তরফে অভিযোগ করা হয়েছে।
আইএসপিআর এখানেই ক্ষান্ত হয়নি। তাদের বক্তব্য, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অন্দরে প্রবল রাজনীতিকরণ ঘটে গিয়েছে। সেই কারণেই এই ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করা হচ্ছে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এই মিডিয়া শাখা, ভারতকে রীতিমতো পরামর্শ দেওয়ার সুরে জানিয়েছে, পড়শিকে দোষারোপ না করে ভারতের উচিত নিজের ভুল-ত্রুটি মেনে নিয়ে সেগুলি সংশোধন করা। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পালাবদলের পর থেকেই ভারতকে কোণঠাসা করার একটা মরিয়া অপচেষ্টা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দেখা যাচ্ছে।