পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশে ট্রেন হাইজ্যাকের ঘটনার ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। বালোচ যোদ্ধাদের সামনে পাকিস্তান সরকারকে অসহায় মনে হচ্ছে। বালোচদের বিরুদ্ধে অভিযানে ইতিমধ্যেই বহু জওয়ানকে হারিয়েছে পাক সেনা। এই আবহে এবার শেহবাজ সরকার বিমান হামলার কথা ভাবছে। এদিকে পাকিস্তান সরকার এখন নিজেদের ব্যর্থতার জন্য ভারতকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে। শেহবাজের রাজনৈতিক উপদেষ্টার অভিযোগ, এতে ভারতের হাত রয়েছে। (আরও পড়ুন: আদানি নয়, শতাংশের নিরিখে চলতি বছরে এই ভারতীয় শিল্পপতির ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি)
আরও পড়ুন: মেট্রোয় বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ট্রেন অপারেটর নিয়োগের ভাবনা, দাবি রিপোর্টে
পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল ডনকে শেহবাজের রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ বলেন, 'হ্যাঁ, ভারত এটা করছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আফগানিস্তানের মতো নিরাপদ আশ্রয়স্থল পেয়েছে তারা। তালিবান ক্ষমতায় আসার আগে এসব প্রাণঘাতী হামলা চালানোর সুযোগ না পেলেও এখন আফগানিস্তানে অ্যামবুশের সুবিধা পাওয়ায় তাদের তৎপরতা বেড়েছে। আমরা সরকারি পর্যায়ে আফগানিস্তানকে এই তৎপরতা বন্ধ করতে বলেছি, অন্যথায় আমরা সেখানে যাব এবং ওই ঘাঁটিগুলোকে টার্গেট করব।' (আরও পড়ুন: হরিয়ানায় পুরভোটে পচা শামুকে পা কাটল বিজেপির, মেয়র নির্বাচনে হার পদ্ম প্রার্থীর)
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, কার্যত ভুয়ো ইন্টেলিজেন্সে পাক সেনাকে বোকা বানায় বালোচরা। গোপন সূত্রে পাকিস্তানি সেনাকে বিশ্বাস করানো হয় যে বালোচরা কোয়েটাতে বড় ধরনের হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। সেই আবহে অন্যত্র থেকে সেনা জওয়ান আনিয়ে কোয়েটায় মোতায়েন করা হয়েছিল। আর অন্য জায়গায় পাক সেনার নজর কম ছিল। সেই সুযোগেই বোলানে এই অপহরণের ছক বাস্তবায়িত করেন বালোচ যোদ্ধারা। (আরও পড়ুন: ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা ৭ বাংলাদেশি হিন্দু আটক, তবে ৩ দালাল ধরতে ব্যর্থ BGB)
আরও পড়ুন: 'মেয়েদের দুটো জায়গার চুল ছাড়া অন্য জায়গার চুল কাটা হারাম'
রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এই হামলায় ৩০ জনেরও বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। প্রায় আট ঘণ্টা বন্দুকযুদ্ধের পরে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল। এখনও শতাধিক বন্দি সেই ট্রেনে আছেন। এই আবহে পাক সেনা 'পূর্ণাঙ্গ উদ্ধার অভিযান' চালাতে চলেছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে বালোচ রাজনৈতিক বন্দিদের দাবিতে অনড় অপহরণকারী বিএলএ। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সেনাপ্রধানের পদ নিয়ে জল্পনার মাঝেই বড়সড় বদলের নির্দেশ ইউনুসের)
উল্লেখ্য, হাইজ্যাক হওয়া জাফর এক্সপ্রেস কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার পেশাওয়ারে যাচ্ছিল। সেই আবহে ১১ মার্চ সকালে গুদালার ও পিরু কোনেরি এলাকার মাঝখানে ট্রেনটি লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এদিকে কোয়েটা রেল স্টেশনে একটি সহায়তা ডেস্ক চালু করেছে পাকিস্তান রেল। ট্রেনে থাকা যাত্রীদের উদ্বিগ্ন পরিজনদের সেখান থেকে পরিস্থিতি সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, যে রুট দিয়ে কোয়েটা থেকে জাফর এক্সপ্রেস পেশাওয়ার যায়, তাতে ১৭টি সুড়ঙ্গ রয়েছে এবং ৮ নম্বর সুড়ঙ্গে ট্রেনটিকে আটকে দিয়েছিল বালোচ সশস্ত্র যোদ্ধারা। এসব সুড়ঙ্গের ভিতরে ট্রেনের গতি অনেক সময় ধীর গতিতে চলে। (আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশে অনুদান নিয়ে ট্রাম্পের দাবির পর 'গোপন নথি' নষ্টের নির্দেশ USAID-এর)
বিএলএ এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্দুকধারীরা ট্রেনে ওঠার আগে বোমা বিস্ফোরণে রেললাইন উড়িয়ে দেয়। রেলওয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা মুখতার আহমেদ ব্লুমবার্গকে বলেন, একটি দুর্গম, পাথুরে এলাকায় গুলি করে ট্রেনটি থামানো হয়। হামলার পর বোলান জেলার একটি প্রত্যন্ত এলাকায় ট্রেনটি থেমে যায়। এদিকে যে জাফর এক্সপ্রেসে এই হামলা, তাতে মোট ৯টি কামরা আছে বলে দানা গিয়েছে। যাদের পণবন্দি করা হয়েছে তাদের মধ্য়ে পাকিস্তানি সেনা, পুলিশ, অ্যান্টি টেররিজম ফোর্স ও ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স রয়েছে। এদিকে বিএলএর তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে যদি পাক সেনা অভিযান চালাতে থাকে তবে সমস্ত পণবন্দিদের খতম করা হবে। বালোচ গোষ্ঠীর তরফে বলা হয়েছে, তাদের বিশেষ ইউনিট - 'মাজিদ ব্রিগেড' এই হাইজ্যাকের পেছনে রয়েছে।