পাকিস্তানের ট্রেনে অপহরণের ঘটনায় শতাধিক যাত্রীকে পণবন্দি করে রাখে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি। বালোচ বিদ্রোহীদের তরফে দেওয়া হয়েছিল ৪৮ ঘণ্টার ডেডলাইন। পাক প্রশাসনকে সাফ জানানো হয়েছিল বালোচ রাজনৈতিক বন্দিদের যাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর তা না হলে, একের পর এক পণবন্দিকে হত্যা করা হবে। এদিকে, ট্রেনে অপহরণের শিকার মানু।কে মুক্ত করতে পাল্টা অপরেশনে নামে পাক সেনা। ৩০ ঘণ্টার অপারেশন শেষে, শেষমেশ উদ্ধার করা হয়েছে পণবন্দিদের বলে জানিয়েছে পাক সেনা। এই গোটা অপারেশন পর্বে ৩০ ঘণ্টা ধরে কী কী হয়েছে তা নিয়েও মুখ খুলেছে পাকিস্তানের সেনা।
বুধবার গুলির যুদ্ধে কার্যত বালোচ বিদ্রোহীদের ধরাশায়ী করে দেয় পাকিস্তানের সেনা। পাকিস্তানের সেনা জানিয়েছে, ৩৩ জন জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে। এরইসঙ্গে শতাধিক পণবন্দিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পাকিস্তানের কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসে প্রথমে বিস্ফোরণ, তারপর যাত্রীদের পণবন্দি এবং তারপর আসে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির হুমকি। এরপর অভিযানে নামে পাক সেনা। জানা গিয়েছে এই গোটা অপারেশনে ২১ জন পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু হয়েছে। ৪ নিরাপত্তা কর্মী আহত। পাকিস্তানের সেনার মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানিয়েছেন, এই গোটা পর্বে কোনও নাগরিকের মৃত্যু হয়নি। উল্লেখ্য, এই ট্রেনে প্রথমে ৪৪০ জন যাত্রী ছিলেন বলে খবর। এরপর বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি দাবি করে তারা ২১৪ জন যাত্রীকে পণবন্দি করেছে। আর ৫০ জনকে হত্যা করেছে বুধবার বিকেলে। বুধবার সন্ধ্যা গড়াতেই খবর আসে যে বালোচ জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে অপহৃত ট্রেন। পাকিস্তানের সেনা সদ্য তার বিবৃতিতে জানিয়েছে,' আজ আমরা মহিলা ও শিশু সহ বিপুল সংখ্যক মানুষকে মুক্ত করেছি... চূড়ান্ত অভিযানটি অত্যন্ত যত্ন সহকারে সম্পন্ন করা হয়েছে।'
এই গোটা অপারেশন শেষ হতে কেন ৩০ ঘণ্টা সময় লাগে পাকিস্তানি সেনার?
পাকিস্তানের সেনার মুখপাত্র লেফ্টন্যান্ট আহমেদ শরিফ বলেন,' উদ্ধার অভিযান পর্যায়ক্রমে অব্যাহত ছিল, এবং সন্ধ্যায় চূড়ান্ত ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে, বাকি সকল অপহৃতদের নিরাপদে রাখা হয়েছিল। যেহেতু সন্ত্রাসীরা যাত্রীদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিল, তাই অভিযানটি অত্যন্ত নির্ভুলতা এবং সতর্কতার সাথে পরিচালিত হয়েছিল।' তার জেরেই ৩০ ঘণ্টা ধরে সন্তর্পণে অপারেশন চালায় পাক সেনা।
প্রথমে আত্মঘাতী বোমারুদের হত্যা
তিনি জানান, প্রথমেই পাক সেনার স্নিপাররা গিয়ে হত্যা করেছে আত্মঘাতী বোমারুদের। জানা গিয়েছে, পণবন্দিদের মাঝে সুইসাইজ ভেস্ট পরে বসেছিল বিদ্রোহীরা। ফলে অপারেশন সহজ ছিল না। পাকিস্তানের সেনা জানিয়েছে, অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন জঙ্গি সেখানে ছিল। তারা মিলেই এই হাইজ্যাক ঘটিয়েছে। অন্যদিকে, শ'য়ে শ'য়ে সৈন্য নিয়ে ময়দানে নামে পাকসেনা।