পাকিস্তানের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল জমায়তে উলামায়ে ইসলামের (এফ) প্রধান মৌলানা ফজলুর রহমান ভারত সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ভারতকে 'শান্তির বার্তা' পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই সফর করতে চান ফজলুর রহমান। পাকিস্তানি চ্যানেল 'আজ নিউজ'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দলের এমপি তথা ফজলুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কামরান মুর্তজা এই তথ্য জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের সাংসদ কামরান মুর্তজা বলেন, মৌলানা ফজলুর রহমান সম্প্রতি ব্যক্তিগতভাবে একজন ভারতীয় কূটনীতিকের কাছে শান্তির বার্তা দিয়েছেন। কামরান বলেন, 'মৌলানা সাহেব ভারত সফরে গিয়ে দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার আবেদন জানাতে চান। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে এই সফর একটি পদক্ষেপ হতে পারে।' মুর্তজা আরও বলেছিলেন যে মৌলানা ফজলুর রহমান ২০০২ এবং ২০০৩ সালে ভারত সফর করেছিলেন। তখনও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল। সেই সময় তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং শান্তি প্রক্রিয়াকে সমর্থন করেছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ার পাশাপাশি মৌলানা ফজলুর রহমান একজন বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত। একসময় তিনি পাকিস্তানের সংসদে বিরোধীদলীয় নেতাও ছিলেন। শীর্ষ গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে নিউজ ১৮-এর রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যবস্থার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ফাটল আরও গভীর হচ্ছে। বিশেষত পঞ্জাবি এবং পশতুন সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্রমেই উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই আবহে নিজেকে আঞ্চলিক শান্তি দূত হিসেবে তুলে ধরে মৌলানা আদতে সেনা প্রধান মুনিরকে চ্যালেঞ্জ করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ডেরা ইসমাইল খানের বাসিন্দা ফজলুর রহমান পশতুন সম্প্রদায়ের। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে পাক সেনা যেভাবে নিজেদের দেশেই পাঠানদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করেছিলেন ফজলুর রহমান। এদিকে রাষ্ট্রসংঘে ভারতও এই বিষয়টি উত্থাপন করেছিল। এই ঘটনা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জাতিগত অসন্তোষ আরও গভীর করে তুলেছে। অনেক পশতুন রাজনীতিবিদ এবং সেনা কর্মকর্তা জেনারেল আসিম মুনিরের নেতৃত্বে অসন্তুষ্ট বলে জানা গেছে। এই আবহে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং আইএসআইয়ের কিছু মাঝারি স্তরের এবং অবসরপ্রাপ্ত পশতুন অফিসার মৌলানার 'শান্তি বার্তা' সমর্থন করছেন। তাঁরা এটাকে জেনারেল মুনিরের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ভারসাম্য হিসেবে দেখছেন।