সম্প্রতি আমেরিকার ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফিনার দাবি করেছিলেন, পাকিস্তান এমন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে যা দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে কোথাও আঘাত হানতে পারবে, এমনকী আমেরিকায় পর্যন্ত আঘাত হানতে পারবে। এই আবহে পাকিস্তানের 'উদ্দেশ্য' নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এদিকে পাক মিসাইল প্রোগ্রামের ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে। এই আবহে এবার আমেরিকার বিরুদ্ধে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। মঙ্গলবার আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে শেহবাজের সাফ বক্তব্য, 'এই ক্ষেত্রে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা জারির কোনও এক্তিয়ার নেই'। (আরও পড়ুন: বড় জয় বিদ্রোহীদের, রাখাইনের পর 'পতন' মায়ানমারের কুকি অধ্যুষিত চিন প্রদেশের)
আরও পড়ুন: পাহাড়ে তৈরি হল নয়া ইতিহাস, ভারতের প্রথম ঝুলন্ত রেল ব্রিজে ছুটল টাওয়ার ওয়াগন
আরও পড়ুন: মার্কিন সংস্থার জেরে মাথায় হাত ভারতের, তবে শুরু হবে তেজসের গুরুত্বপূর্ণ ট্রায়াল
ক্যাবিনেট বৈঠকে এই বিষয়ে শেহবাজ শরিফ বলেন, 'পাকিস্তানের পরমাণু নীতি আগ্রাসী নয়। ১০০ শতাংশ ভাবে এটা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষার জন্যে রয়েছে। এই প্রোগ্রাম না আমার, না কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের। এটা ২৪ কোটি পাকিস্তানির। এই প্রোগ্রামে কোনও আপস করা হবে না। গোটা দেশ এই ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ।' এদিকে কয়েকদিন আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান এক সেমিনারে বলেছিলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ পরমাণু চুক্তি করুক। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বাংলাদেশিদের একটা বড় অংশ 'স্বপ্ন' দেখে, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের থেকে পরমাণু অস্ত্রের সাহায্য পাওয়ার। আবার কয়েকদিন আগেই এক পাক ধর্মগুরুকেও বলতে শোনা যায়, 'পাকিস্তানের পরমাণু বোমা বাংলাদেশের'। তবে এবার সেই পাকিস্তানই মিসাইল প্রোগ্রাম নিয়ে চাপে পড়েছে। (আরও পড়ুন: হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে হম্বিতম্বি শেষ? 'প্র্যাক্টিকাল কথা' বলল ইউনুসের সরকার)
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে এয়ারস্ট্রাইক পাকিস্তানের! মৃত ১৫, পালটা হামলার হুমকি তালিবানের
আরও পড়ুন: সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ, ফের কি দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হবে? ঠান্ডা পড়বে কবে?
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পাকিস্তানের নতুন ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আমেরিকা। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কমপ্লেক্স ও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে একটি নির্বাহী আদেশে 'গণবিধ্বংসী অস্ত্রের সরবরাহকারী' আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে পাকিস্তানের এই সংস্থাগুলির যেকোনও মার্কিন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে ওয়াশিংটন। এরই সঙ্গে আমেরিকানরা তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ 'দুর্ভাগ্যজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট'। তাদের অভিযোগ, 'সামরিক বৈষম্য বাড়ানোর লক্ষ্যে' আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে মার্কিন এই সিদ্ধান্ত। (আরও পড়ুন: অনিশ্চয়তায় ভুগছে বিশ্ব, ভারত কীভাবে এগিয়ে যাবে? বাজেটের আগে বৈঠকে মোদী)
আরও পড়ুন: তাঁর কথায় পড়েছিলেন 'অস্বস্তিতে', সেই বাজপেয়ীর জন্ম শতবার্ষিকীতে পেন ধরলেন মোদী
উল্লেখ্য, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক ফ্যাক্টশিটে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদভিত্তিক এনডিসি দেশের দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক-ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সরঞ্জামের জন্য উপাদান সংগ্রহের চেষ্টা করেছিল সম্প্রতি। এতে বলা হয়, এনডিসি পাকিস্তানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের জন্য দায়ী। এর মধ্যে শাহিন সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি রয়েছে। প্রসঙ্গত, শাহিন সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে সপ্তম দেশ হিসেবে প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় পাকিস্তান। বুলেটিনের হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানের অস্ত্রাগারে প্রায় ১৭০টি ওয়ারহেড রয়েছে। এই আবহে পাকিস্তানের ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাদের পারমাণবিক ক্ষমতা খর্ব করেছে আমেরিকা। আর সেই পাকিস্তান নাকি আবার সম্প্রতি চিনের থেকে পারমাণবিক অস্ত্র পাওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে। এহেন দেশের থেকেই বাংলাদেশিরা আবার পারমাণবিক সাহায্যের আশা করে। তবে এককালের 'বন্ধু' পাকিস্তানের ওপর সম্প্রতি ব্যালিস্টিক মিসাইল ইস্যুতে বেজায় চটেছে আমেরিকা।