ভারত ও আফগানিস্তানের যৌথ বিবৃতিতে কাশ্মীরের কথা উল্লেখ করায় ক্ষুব্ধ পাকিস্তান। এদিকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন জারি আছে। এই আবহে ভারতে আসা তালিবানের বিদেশমন্ত্রী আমির মুত্তাকি বলেছেন, তিনি কাশ্মীরে ভারতের সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করেন। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে পাক বিমান হামলার পর ডুরান্ড লাইনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই আবহে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি অভিযোগ করেছেন, তালিবানরা কাশ্মীরি জনগণের ওপর কথিত নৃশংসতাকে সমর্থন করছে। তিনি বলেন, তালিবানরা ইতিহাস ও মুসলমানদের সংহতির প্রতি অবিচার করছে। এদিকে এই পাকিস্তানই অধিকৃত কাশ্মীরে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে বহু কাশ্মীরিকে হত্যা করেছে সম্প্রতি।
উল্লেখ্য, তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আলি খান মুত্তাকির দিল্লি সফরের সময় যৌথ বিবৃতি জারি করেছে ভারত-আফগানিস্তান। সেই যৌথ বিবৃতি নিয়ে পাকিস্তান এবার তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। এমনকী ইসলামাবাদে আফগান রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে পাক বিদেশ মন্ত্রক। বিবৃতিতে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই আবহে পাকিস্তান সেই বিবৃতির আপত্তি জানিয়ে বলেছে যে এটা রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন।
পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে, যৌথ বিবৃতিতে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের অংশ হিসেবে ঘোষণা করা রাষ্ট্রসংঘের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাব এবং জম্মু ও কাশ্মীরের আইনি মর্যাদার পরিপন্থী। অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের আত্মত্যাগ ও অনুভূতির প্রতি এটা ভারতের অসংবেদনশীলতা।' এদিকে দিল্লিতে বসে আফগান বিদেশমন্ত্রী বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। মুত্তাকির এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। তাদের দাবি, আফগানিস্তানের মাটি থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে এমন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী সম্পর্কে তারা বেশ কয়েকবার আফগানিস্তানকে অবহিত করেছে। পাকিস্তানের বক্তব্য, 'আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব থেকে নিজেকে রেহাই দিতে পারে না।' এদিকে বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানে বসবাসরত অননুমোদিত আফগান নাগরিকদের তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার সময় এসেছে।
উল্লেখ্যে, তালিবানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এখন ভারতে আছেন। প্রসঙ্গত, তালিবানরা কাবুলে ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফরে দিল্লি এসেছেন মুত্তাকি। আর সেদিনই কাবুলে বিস্ফোরণ হয়। জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর মধ্যরাতের দিকে কাবুলের পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর পাক সীমান্তে সেনা আউটপোস্টে পালটা হামলা চালায় আফগনরা। সেই হামলায় পাকিস্তানের ৫৮ সেনা জওয়ান নিহত বলে দাবি করে তালিবান। এদিকে পাক সেনা দাবি করে, তাদের ২৩ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।