দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুম রেলওয়ে স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হল এক পাকিস্তানি মহিলাকে। জানা গিয়েছে, নেপালের কারাগার থেকে পালিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল ৫০ বছর বয়সি সেই মহিলা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা নেপালে মাদক পাচার করত। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে চেপে সাবরুম রেলস্টেশনে পৌঁছায় সে। এরপর সন্দেহজনক আচরণের জেরে তাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিকভাবে দিল্লির পুরাতন বস্তির বাসিন্দা হিসেবে নিজেকে দাবি করেছিল সেই মহিলা। নিজের নাম বলেছিল শাহিনা পারভীন। তবে কোনও বৈধ পরিচয়পত্র সে দেখাতে পারেনি। পরে পুলিশ যখন তার সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র তল্লাশি করে তখন তারা বেশ কয়েকটি পাকিস্তানি নম্বরের সন্ধান পায়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী বলে যে সে তিন বছর আগে বাংলাদেশে এসেছিল। সেখান থেকে একজন এজেন্টের সহায়তায় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে অবৈধভাবে ভারতে পৌঁছেছিল সে। পরে দিল্লিতে গৃহস্থালির কাজ শুরু করে সেই মহিলা। এবং এখন বাংলাদেশ হয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করছিল সে। যদিও পরে জানা যায়, এই সব দাবি ভুয়ো।
এরপর চাপ দেওয়া হলে সেই মহিলা নিজেকে লুই নিখাত আখতার বানু বলে পরিচয় দেয়। ধৃত মহিলা বলে, পাকিস্তানের শেখপুরা জেলার ইয়াংনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা সে। মহম্মদ গোলাফ ফরাজের স্ত্রী সে। এই বানু প্রায় ১২ বছর আগে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ব্যবহার করে নেপালে গিয়েছিল এবং মাদক চক্রেক সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল। ২০১৪ সালে নেপালি কর্তৃপক্ষ তাকে এক কেজি ব্রাউন সুগার রাখার জন্য গ্রেফতার করেছিল এবং ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। কাঠমান্ডুতে সহিংসতার আবহে সে জেল থেকে পালিয়ে যায়। এর আগে গত মাস পর্যন্ত ওই মহিলা কাঠমান্ডুতে বন্দি ছিল। দুই সপ্তাহ আগে সে এজেন্টের সাহায্যে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন এবং ত্রিপুরা বা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছানোর পরে দেশে ফিরতে চেয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হওয়ার পর বানু ট্রেনে করে ত্রিপুরায় যায় এবং সাবরুমে পৌঁছায়। সেখান থেকে সে বাংলাদেশে যেতে চেয়েছিল। বর্তমানে এই মহিলা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে এবং তার বক্তব্য যাচাই করতে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এদিকে সীমান্তে চোরাচালানের সাথে তার যোগসূত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।