মহারাষ্ট্রের পালঘরে শিশুচুরির গুজবে ৩ সন্ন্যাসী-সহ ৩ জনকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে পালঘরের গড়চিঞ্চলে গ্রামে। প্রায় ১০০ গ্রামবাসী সশস্ত্র অবস্থায় সন্ন্যাসীদের আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। মৃত ২ সন্ন্যাসীর মধ্যে ১ জনের বয়স ৭০ বছর।
পালঘরের জেলাশাসক জানিয়েছেন, ‘সন্ন্যাসীরা কান্দিভলি থেকে এসেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁরা সুরাত যাচ্ছিলেন। পথে আক্রমণের শিকার হন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনায় ১১০ জন গ্রামবাসীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।’
ঘটনার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে লাঠি ও পাথর হাতে সন্ন্যাসীদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। গাড়ির কাচ ভেঙে বার করছেন তাঁদের। গ্রামবাসীরা পুলিশের ওপরেও আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী।
ঘটনায় ১১০ জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ১০১ জনকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হেফাজতে নিয়েছেন তদন্তকারীরা। ৯ জন নাবালককে পাঠানো হয়েছে জুভেনাইল হোমে।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদ। জুনা আখড়ার ওই সন্ন্যাসীদের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সন্ন্যাসীরা লকডাউন ওঠার পর পথে নামবেন বলে জানিয়েছেন পরিষদের সভাপতি নরেন্দ্র গিরি।
ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মহারাষ্ট্রের জোট সরকার। রবিবার রাতে একথা জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা যেন না হয় সেব্যাপারেও সতর্ক করেছেন তিনি। এব্যাপারে যা সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে, পুলিশ তাদের ওপর কড়া নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, ‘আক্রান্ত ও হামলাকারীরা একই সম্প্রদায়ের লোক। এই নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা হলে মহারাষ্ট্র পুলিশের সাইবার সেল কড়া পদক্ষেপ করবে।’
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে জানিয়েছেন, পালঘর গণপিটুনিতে অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করা হবে। ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছিলেন সেরাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস।