দীর্ঘসময় ধরে ডিউটিতে রয়েছে কেউ। কেউ আবার অনেকক্ষণ না ঘুমিয়ে রয়েছে। আধাসামরিক বাহিনীর সেনাদের জীবনযাত্রা আর পাঁচজন নাগরিকের থেকে অনেকটাই আলাদা। এর জেরও সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে নানাভাবে। গত পাঁচ বছরে আধাসামরিক বাহিনীতে আত্মহত্যার সংখ্যা ৭৩০। সরকারি খতিয়ান বলছে, আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে দুই ধরনের প্রবণতা দিনদিন বেড়ে চলেছে। যা য়থেষ্ট উদ্বেগজনক। এর মধ্যে একটি হল আত্মহত্যার প্রবণতা। অন্যটি সময়ের আগেই স্বেচ্ছাবসর বা ভলান্টারি রিটায়ারমেন্ট। এই পরিস্থিতিতেই আধাসামরিক বাহিনীর জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের পরামর্শ ১০০ দিনের ছুটিকে আরও বেশি করে কার্যকর করা হোক।
আরও পড়ুন - ‘দিদি চাইলে কী না হয়!’ অনুদানের আশায় আজও অপেক্ষায় মালদার অষ্টকগানের শিল্পীরা
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্যসভাকে তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, গত ৫ বছরে ৭৩০ জওয়ান আত্মহত্যা করেছে। অন্যদিকে ৫৫,০০০ জওয়ান হয় চাকরি ছেড়ে দিয়েছে, নয় স্বেচ্ছাবসর নিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার কারণ ব্যক্তিগত।
আত্মহত্যার কারণ খতিয়ে দেখতে মন্ত্রকের তরফে একটি টাস্ক ফোর্স নিয়োগ করা হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছে, ৮০ শতাংশ আত্মহত্যাই জওয়ানদের ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পর সংঘটিত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আত্মহত্যার কারণ দেখা গিয়েছে, পরিবারের কারও মৃত্যু বা স্ত্রী অথবা স্বামীর মৃত্যু। পরবর্তী কারণ হিসেবে দেখা গিয়েছে, বৈবাহিক জীবনের অশান্তি বা বিবাহবিচ্ছেদ। এছাড়াও, আর্থিক অনটন, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার সুযোগ ঠিকমতো দিতে না পারার কারণেও বেশ কিছু আত্মহত্য়ার ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন - শীতকালে লিফ্ট দিয়ে ওঠানামা হতে পারে বিপজ্জনক! জানুন কারণ
পরিস্থিতি সামাল দিতে এই অবস্থায় বিশেষ নীতির কথাও ভাবা হচ্ছে। আধাসামরিক বাহিনীর মানুষরা যাতে পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া জরুরি বলে মনে করছে মন্ত্রক। এই দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী (Minister of State for Home) নিত্যানন্দ রাই রাজ্যসভায় বলেন, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে মাত্র ৬৩০২ জন সেনা তাদের পরিবারের সঙ্গে ১০০ দিন সময় কাটিয়েছে। ২০২৩ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৮৬৩৬ জন ও ২০২১ সালে সংখ্যাটি ছিল ৭৮৬৪ জন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের টাস্ক ফোর্স এই মর্মেই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নিদান দিয়েছে। যাতে আরও বেশি জওয়ান তাদের পরিবারের সঙ্গে সঠিকভাবে ছুটি কাটাতে পারে,সেই ব্যবস্থা করা জরুরি বলে জানিয়েছে টাস্ক ফোর্স।