আসন বিন্যাস নিয়ে এবার তৃণমূল কংগ্রেস বনাম এনডিএ সরকার লড়াই প্রকাশ্যে চলে এল। আর এই ইস্যুতে ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূলকে পাশে পেতে মরিয়া কংগ্রেস। তার জন্য তড়িঘড়ি সোমবার সকাল ১০টায় ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকল কংগ্রেস। বিশেষভাবে সেখানে আমন্ত্রণ করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। আসনবন্টন ইস্যুতে প্রতিবাদ করে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি লিখেছেন স্পিকার ওম বিড়লাকে। এই কথা জানতে পেরেই যোগাযোগ করলেন কংগ্রেসের লোকসভার ডেপুটি লিডার গৌরব গগৈ। কিরেন রিজিজুর সঙ্গেও যোগাযোগ করেন গৌরব গগৈ। এই স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে সংসদে সরব হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটা ব্লক দাবি করা হয়েছিল। যেখানে সব তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা থাকবেন। সেখানে ইচ্ছেমতো যত্রতত্র আসন বরাদ্দ করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস–সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলিকে বলে অভিযোগ। লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিছনের আসনে রাখা হয়নি দলের একজন সাংসদকেও বলে অভিযোগ। সদ্য সাংসদ হয়ে সংসদে এসেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তাঁকে বিরোধী বেঞ্চের চতুর্থ সারিতে একদম ধারে বসার জায়গা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে বেজায় চটেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস। গত জুলাই মাসে দলীয় সাংসদদের আসন বিন্যাসের ক্রমিক সংখ্যার তালিকা তৈরি করে জমা দেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: অজানা ফল খেয়ে একসঙ্গে অসুস্থ ২০ জন, পড়ুয়া–শিক্ষিকারা ভর্তি উত্তর দিনাজপুরের স্কুলে
কিন্তু শনিবার যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা হওয়া সত্বেও তাঁর আসন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সমাজবাদী পার্টির সাংসদদের সামনে। যাতে বিষয়টি দাঁড়াচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য সাংসদরা বসবেন এনডিএ’র জোটে থাকা চিরাগ পাসোয়ান ও জিতনরাম মাজির পিছনের সারিতে। আর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিছনের সারিতে বসবেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদরা। চিঠি অনুযায়ী যে কাজ হয়নি তা বুঝতে পেরে গর্জে ওঠেন সুদীপবাবু। এবার কড়া চিঠি দিয়েছেন লোকসভার স্পিকারকে। এই আসন বন্টন করে আসলে বিরোধী জোটকে ভাঙতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার বলে মনে করা হচ্ছে। যা নিয়ে সরব কংগ্রেসও।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি আসন দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে। আর তাঁর পাশে থাকবেন কেসি বেনুগোপাল। তার পাশে টিআর বালু। অন্য সারিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশাপাশি বসতে দেওয়া হয়েছে। সৌগত রায় আর কাকলি ঘোষদস্তিদারের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। আর মহুয়া মৈত্রের আসন দেওয়া হয়েছে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির পাশে। কিন্তু সুদীপবাবুর কাছে জানতে চাওয়ার পর যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল তাতে এমন ছিল না। এই বিষয়ে সুদীপবাবু সরাসরি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘রাতে আমার কাছে ইমেল আসে যেখানে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের বসার যে জায়গা অদ্ভূতভাবে সাজানো। প্রথমসারিতে আমার পাশে অখিলেশ যাদব। পিছনে তৃণমূলের কোনও সাংসদ নেই। পরের ব্লকে সরকার পক্ষের দুই মন্ত্রী বসেছেন। তাঁদের পিছনে রয়েছেন দু’জন তৃণমূল সাংসদ। আমি যে তালিকা দিয়েছিলাম সেখানে দ্বিতীয় সারিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ছিল।’