তৃণমূল কংগ্রেস–সহ বিরোধীদের চাপে বৃহস্পতিবার বেড়ে গেল ‘ওয়াকফ সংশোধনী বিল’ সংক্রান্ত সংসদীয় যৌথ কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার সময়সীমা। লোকসভায় এই বিল নিয়ে তুমুল ঝড় ওঠে। তার জেরেই পিছিয়ে দিতে হয়েছে ‘ওয়াকফ সংশোধনী বিল’। এটা বিরোধীদের কাছে বড় জয় হিসাবেই দেখা হচ্ছে। কারণ এনডিএ সরকার চাইলে এই বিল ধ্বনি ভোটে পাশ করিয়ে নিতে পারত। কিন্তু সেখানে এমন কয়েকটি যুক্তি বিরোধীরা তুলে ধরলেন তাতে আগামী বছর ২০২৫ সালের বাদল অধিবেশনের আগে পর্যন্ত এই বিল আর সামনে আসবে না।
সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে এবার আদানি ইস্যু, উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে হিংসার ঘটনা এবং মণিপুরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ে তপ্ত হয়ে ওঠে। সেখানে ‘ওয়াকফ সংশোধনী বিল’ নিয়ে এসে সবটা ঠাণ্ডা করে দিতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে ওই বিলটাই ঠাণ্ডা ঘরে পাঠিয়ে দিল সংঘবদ্ধ বিরোধীরা। অন্যান্য ইস্যুতে বারবার মুলতুবি হয়ে যাচ্ছিল সংসদ। অধিবেশন চালাতে ব্যর্থ হচ্ছিল সরকার। এই গোলমালের মধ্যেই ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার ছক ছিল। কিন্তু বিরোধীদের জোটের চাপ দেখে আগামী বাজেট অধিবেশন (২০২৫ সালের এপ্রিল মাস) পর্যন্ত যৌথ কমিটির রিপোর্ট পেশ করার জন্য সময় চাইলেন ওয়াকফ কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপির সাংসদ জগদম্বিকা পাল। আর লোকসভায় ধ্বনি ভোটে সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখলেন সুখেন্দুশেখর, লাস্ট বেঞ্চের আর্জি, দূরত্ব কি বাড়ল?
এই ওয়াকফ সংশোধনী বিল এনে দেশের সংখ্যালঘু মুসলিমদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে চাওয়া হচ্ছে বলে সোচ্চার হন বিরোধীরা। সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করতে এই বিল আনা হচ্ছে বলেও সুর চড়ান বিরোধীরা। এই তথ্য তুলে ধরার পর বিরোধীদের কড়া সমালোচনা করেন সংসদীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিবাদ করছি অধিবেশন ভণ্ডুল করার চেষ্টার বিরুদ্ধে। যা করছে কংগ্রেস এবং তাদের সহযোগীরা।’ কিন্তু অবশেষে এই বিল ঠাণ্ডা ঘরে চলে গেল। বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ বিরোধিতায় পিছু হঠতে হল কেন্দ্রীয় সরকারকে।
১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনকে সংশোধন করার পর গত ৮ অগস্ট সেটি লোকসভায় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু পেশ করেছিলেন। কিন্তু বিরোধীদের প্রবল চাপে ওই বিল সংসদীয় যৌথ কমিটিতে পাঠাতে হয়। নতুন ওই বিলে ৪৪টি সংশোধনী আনতে চায় কেন্দ্র। যার বেশিরভাগে আপত্তি আছে বিরোধীদের। তাই ওই কমিটি ২৬টি বৈঠক করার পরও তা নিয়ে সবর্সম্মত রিপোর্ট তৈরি করতে পারেনি। আরও আলোচনা করার দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। সেই দাবি অবশেষে মেনে নিয়েছেন কমিটির চেয়ারম্যান। রাজ্যসভাতেও কংগ্রেস এবং সিপিএম ১৬টি নোটিশ দিলেও তা খারিজ করে দেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়।