দীক্ষা ভরদ্বাজ
নির্দেশিকা প্রণয়নের আগে সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে? কনটেন্ট সংক্রান্ত বিষয়ে আমলাদের হাতে কেন ‘ব্যাপক’ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে? নয়া ডিজিটাল মিডিয়ার নিয়মাবলী নিয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের আধিকারিকদের এমনই সব চোখা চোখা প্রশ্ন করল তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। বিষয়টির সঙ্গে অবহিত সদস্যরা একথা জানিয়েছেন।
কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন কমিটির সদস্যরা নয়া নিয়মাবলী এবং সেগুলি কার্যকর করা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করেছেন। ওই সূত্র বলেছেন, ‘সাংসদ এবং আধিকারিকদের মধ্যে ভালো বৈঠক হয়েছে। আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন যে নয়া নিয়ম কার্যকর করার আগে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে চলা হয়েছে।’
বৈঠকে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল বর্তমান কাঠামোর সঙ্গে নয়া নিয়মের 'দ্বন্দ্ব'। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, খবর এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মকেও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯ (এ) ধারার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত আদতে মূল আইনের বিরোধী। আগেই ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ‘সাইবার সাথী’-র প্রতিষ্ঠাতা এনএস নাপ্পিনাই জানিয়েছেন, মূল আইনের ভিত্তিতে নয়া নিয়মের বিষয়গুলি বিবেচনা করতে হবে। বলেছিলেন, ‘অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলিকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯ (এ) ধারার আওতায় আনা হলে নয়া নিয়মগুলিকে সংসদের আইনের নিরিখে কাটাছেঁড়া করতে হবে।’
একইসঙ্গে ওই সূত্র জানিয়েছেন, কনটেন্টের উপর নিয়ন্ত্রণের জন্য আমলাদের হাতে যে ব্য়াপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন বিরোধী সাংসদরা। তিনি বলেন, ‘সদস্যরা জানতে চেয়েছেন যে আমলাদের হাতে কেন এত ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে? প্ল্যাটফর্মগুলির সেই বিষয়টি কীরকম ধাঁচের হবে?’
গত মাসের শেষের দিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কনটেন্টে এবার স্ত্রিস্তরীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করেছে কেন্দ্র। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর তিনি জানিয়েছিলেন, নয়া নিয়মের আওতায় বিভিন্ন পর্যায়ে স্ব-নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। প্রথম পর্যায় প্রকাশক স্ব-নিয়ন্ত্রণ করবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে স্ব-নিয়ন্ত্রক সংস্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হবে। তৃতীয় পর্যায় হবে সার্বিক পর্যবেক্ষণের। মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য স্ত্রিস্তরীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওটিটি এবং ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমগুলিকে নিজেদের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। আমরা নথিভুক্তকরণ বাধ্যতামূলক করছি না। আমরা তথ্য চাইছি।’ সমালোচকদের বক্তব্য, আন্তঃমন্ত্রিত্ব কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রকের এক আধিকারিক। তার ফলে কনটেন্টে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ বাড়বে। সেনসরশিপের সংক্রান্ত অভিযোগও উঠবে।