অবশেষে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ইডির মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করা হল। আজ সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে এই নিয়ে নির্দেশে বলা হয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জামিন দেওয়া হবে। এই মামলায় জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে সব গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান নেওয়ার চেষ্টা করবে ট্রায়াল কোর্ট। সেই সময় ট্রায়াল কোর্টের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে পার্থকে। এই আবহে যদি ১ ফেব্রুয়ারির আগে চার্জ গঠন এবং সাক্ষীদের বয়ান গ্রহণ হয়ে যায়, তবে আগেই জামিন পেতে পারেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সিবিআইয়ের মামলায় এখনও জামিন পাননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই মামলাটি নিম্ন আদালতে বিচারাধীন বর্তমানে। (আরও পড়ুন: ঘুষ চেয়েছিলেন বিচারক, ইঞ্জিনিয়ার আত্মহত্যা মামলায় বিস্ফোরক অতুলের বাবা)
আরও পড়ুন: CBI চার্জশিটকে 'কলকাতা পুলিশের চার্জশিট' আখ্যা, আরজি কর নির্যাতিতার বাবা বললেন…
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এর আগে জামিন পেয়ে গিয়েছেন 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। তবে এখনও জেলেই দিন কাটছে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এর আগে হাই কোর্টে পার্থর জামিনের মামলায় দ্বিধাবিভক্ত ছিল বেঞ্চ। এই আবহে জামিন পাননি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। পরে জামিন মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। সেই জামিন মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে গত ৪ ডিসেম্বর শেষ হয়ে গিয়েছিল। রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতিরা। আর আজ রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। সঙ্গে জানিয়ে দিল, জামিন পেলেও কোনও সরকারি পদে থাকতে পারবেন না পার্থ, জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। তিনি শুধুমাত্র বেহালা পশ্চিমে বিধায়ক পদেই থাকতে পারবেন এই সময়ে। (আরও পড়ুন: সেন্ট মার্টিনের ঘুম উড়িয়েছে আরাকান আর্মি, বাংলাদেশে বাড়বে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ?)
আরও পড়ুন: ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কতটা জানেন? কী হাল পাকিস্তানের?
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৩ জুলাই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করে ইডি। গ্রেফতার করা হয় তাঁর বান্ধবী অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। প্রথমে টালিগঞ্জে অর্পিতার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে ২১ কোটি টাকারও বেশি নগদ উদ্ধার করেছিল ইডি। এরপরে অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকেও টাকা উদ্ধার করা হয়। পাওয়া যায় ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এত নগদ দেখে চোখ কপালে উঠেছিল বঙ্গবাসীর। তবে এখানেই শেষ হয়নি দুর্নীতির টাকার হিসেব। (আরও পড়ুন: হাতছাড়া হবে ফেনি? কলকাতা দখলের ডাক দেওয়া বাংলাদেশ এখন নিজেই আতঙ্কে কাঁপছে!)
আরও পড়ুন: বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাংলাদেশিদের খোঁজ পুলিশের! একদিনেই চিহ্নিত ২০ অনুপ্রবেশকারী
এদিকে পার্থ, অর্পিতার পরও এই শিক্ষক নিয়োগ দুর্তীতি মামলায় রাজ্যের আরও হেভিওয়েটরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের জালে জড়িয়েছেন। মানিক ভট্টাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন এসএসসি উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সচিব অশোক সাহা, প্রাক্তন তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষ সহ একাধিক জন এই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাজতে যান। তাঁদের মধ্যে অনেকেই জামিন পেলেও পার্থ এখনও জেলে।
এদিকে গত ২০২৩ সালে যুব তৃণমূলের সমাবেশে অভিষেক দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর নাম বলানোর জন্য ধৃতদের ওপর চাপ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এরপরই কুন্তল ঘোষ প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ জানান যে তাঁকে দিয়ে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য চাপ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এহেন পরিস্থিতিতে কুন্তলের মাধ্যমেই এই মামলায় না জড়িয়েছিল অভিষেকেরও।