আপ প্রধান তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে হারিয়ে চর্চার পাত্র হয়ে উঠেছেন পরবেশ সাহিব সিং বর্মা। তাঁর বাবা একদা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এদিকে তিনি নিজে হয়ে উঠেছেন 'জায়ান্ট কিলার'। এহেন পরবেশ হিন্দুস্তান টাইমসের মুখোমুখি হয়ে বললেন, 'মানুষ বিজেপির ওপর ভরসা করেছে। গত ২০ বছরে যে কাজ হয়নি, তারা মনে করেন বিজেপি সেই কাজ করবে। আমরা জনগণের আস্থা অর্জন করেছি। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে।'
এরই সঙ্গে আম আদমি পার্টিকে তোপ দেগে পরবেশ বলেন, 'গত ১০ বছর ধরে তারা মিথ্যাচার করে মানুষকে ভুয়ো স্বপ্ন দেখিয়েছে। এই নির্বাচনের সময় প্রচার চলাকালীন নিজেদের কাজের একটা ছবিও তারা দেখাতে পারেনি। শীশমহল এবং মদের দোকান ছাড়া গত ১০ বছরে কিছু করেনি এই সরকার। কোভিড মহামারীর সময় যখন অক্সিজেন, ওষুধের প্রয়োজন হয়, তখন অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁদের মদ খাইয়েছেন। সেই সময় তিনি নিজের শীশমহল তৈরিতে ব্যস্ত থেকেছেন। আমরা দিল্লির মানুষের জন্য অনেক কাজ করব। মহিলা সমৃদ্ধি যোজনা (যার অধীনে মহিলাদের মাসে ২৫০০ টাকা দেওয়া হবে), যমুনা নদীর তীরে পরিষ্কার, বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান, দূষণ হ্রাসে পদক্ষেপ, যানজট কমাতে নতুন ফ্লাইওভার, নতুন মেট্রো লাইনের মতো কাজ করব। এছাড়াও নিকাশি ও জলের পাইপলাইন স্থাপন, গ্রামগুলির উন্নয়ন এবং অন্যান্য কাজগুলিও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করা হবে।'
এদিকে পরবেশ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হবেন কি না, এই প্রশ্ন করা হলে তিনি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, 'আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিজেপি পরিষদীয় দল একসঙ্গে বসবে এবং পরিষদীয় দলের নেতা বেছে নেওয়া হবে। এরপর দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন, পরে নাম ঘোষণা করা হবে। নামটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।' এর আগে বাবা মুখ্যমন্ত্রী হবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পরবেশ কন্যা স্বনিধি বলেছিলেন, দল যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, সেটাই মেনে চলবেন তিনি। পরবেশও এই নিয়ে 'হ্যা' বা 'না' কিছু বললেন না সরাসরি।
উল্লেখ্য, এর আগে বিদায়ী স্পিকারকে হারিয়ে ২০১৩ সালে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন পরবেশ। তবে এক বছর পরেই তাঁকে লোকসভা নির্বাচনে দাঁড় করানো হয়েছিল। সেই চ্যালেঞ্জেও সফল হয়েছিলেন। বিজেপির টিকিটে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন পরবেশ। পাঁচ বছর পরে ওই আসন থেকেই ৫.৭৮ লাখ ভোটে জিতেছিলেন। যদিও ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করেননি। কারণ বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে নয়াদিল্লি বিধানসভা আসনে টানা তিনবার জিতেছিলেন কেজরিওয়াল। কিন্তু চতুর্থবারে সফল হলেন না। বরং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে ৪৮ বছর পরে নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে পদ্মফুল ফোটালেন পরবেশ। বিজেপি প্রার্থী পরবেশ বর্মার কাছে ৪,০৪৯ ভোটে পরাজিত হন কেজরিওয়াল। ২০১৩ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে শীলা দীক্ষিতকে হারিয়ে লাইমলাইটে চলে এসেছিলেন কেজরিওয়াল। ২৫,০০০-র বেশি ভোটে কংগ্রেসের 'মুখ'-কে হারিয়ে দিয়েছিলেন। দু'বছর পরে জয়ের মার্জিন আরও বাড়িয়েছিলেন। জিতেছিলেন প্রায় ৩২,০০০ ভোটে। ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেজরিওয়ালের জয়ের মার্জিন ছিল ২১,৬৮৭। সেখান থেকে ২০২৫ সালে হেরে গেলেন কেজরিওয়াল। তাই তাঁকে হারানো পরবেশকে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।