করোনাভাইরাস সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে হাইকোর্টগুলিকে কিছুটা সতর্ক থাকার বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি বিনীত সরণ এবং বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের অবসরকালীন বেঞ্চের মন্তব্য করা হয়েছে, হাইকোর্টের এমন নির্দেশ দেওয়া উচিত, যা প্রণয়ন করা যাবে।
সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়েছে, ‘এরকম বিষয়গুলি বিবেচনার সময় এবং আক্রান্ত রোগীদের স্বস্তি দিতে কখনও কখনও অনিচ্ছাকৃতভাবে বাড়তি পদক্ষেপ ফেলে উদ্বিগ্ন হাইকোর্ট এবং এমন রায় দিয়ে ফেলে, যা প্রণয়ন করা সম্ভব নয়।
গত ১৭ মে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যে রায়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়েই এলাহাবাদ হাইকোর্ট মন্তব্য করেছিল, উত্তরপ্রদেশের পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ‘রামের ভরসায়’ চলে। প্রতিটি গ্রামে আইসিইউয়ের সুবিধা থাকা দুটি অ্যাম্বুলেন্স মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর-সহ আইসিইউ বেড এবং বাইপ্যাপের বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেই রায়ের ‘খামতি’ চিহ্নিত করে উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেন, রাজ্যে ৯৭,০০০ গ্রাম আছে। এক মাসের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা ‘মানুষের পক্ষে’ সম্ভব নয়।
সেই আবেদনের শুনানিতে করোনা পরিস্থিতিতে নজর দেওয়ার জন্য হাইকোর্টের প্রশংসা করেছে শীর্ষ আদালত। তবে এমন নির্দেশ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা প্রণয়ন করা ‘অসম্ভব’। তবে হাইকোর্টে যে মামলা চলছে, তাতে স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে বিচারপতি বিনীত সরণ এবং বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের অবসরকালীন বেঞ্চ জানিয়েছে, জাতীয় এবং আন্তঃআন্তর্জাতিক প্রভাব সংক্রান্ত বিষয়ে রায়দান এড়িয়ে যাওয়া উচিত হাইকোর্টের। বিশেষত সেইসকল বিষয়ে যখন সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে।
পাশাপাশি মেহতা আর্জি জানান, এই ধরনের করোনা সংক্রান্ত সকল জনস্বার্থ মামলার শুনানি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে হওয়া উচিত। এলাহাবাদ হাইকোর্টের একাধিক বেঞ্চেই করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলা চলছে। তার ফলে বিভিন্ন রকমের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। মেহতা বলেন, ‘অন্যান্য হাইকোর্টেও একইরকম অবস্থা হচ্ছে। সেই ধরনের মামলায় আন্তঃরাজ্য বিষয়ও জড়িত আছে। কারণ কয়েকটি বিষয় শুনছে কেরালা হাইকোর্ট। যার প্রভাব কর্নাটকের উপর পড়তে পারে।’ যদিও সেই আর্জি গ্রহণ করেনি দুই সদস্যের বেঞ্চ। শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, ‘আমরা কোনও সাধারণ রায় দেব না। বেঞ্চ গঠনের বিশেষ ক্ষমতা আছে প্রধান বিচারপতির হাতে। (কোন মামলা কোথায় যাবে), সেই সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়ার দায়িত্ব তাঁদের। আমরা হাইকোর্টের মনোবল ভেঙে দিতে পারি না।’