মদ নিষিদ্ধ করার বহুল আলোচিত আইন কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে বিহার সরকার আর তাই রাজ্যের জনগণের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। মঙ্গলবার এমনই পর্যবেক্ষণ করেছেন পাটনা হাই কোর্টের বিচারপতি পূর্ণেন্দু সিং। এর আগে বিচারপিত পূর্ণেন্দু সিং রাজ্যের মাদক সমস্যা, বিষমদ কাণ্ড, বাজেয়াপ্ত মদের বোতল সঠিক ভাবে নষ্ট না করার বিরূপ পরিণতি নিয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসেই বিহারে মদ বিক্রি এবং সেবনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তবে বারংবার বিহারে বিষমদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে সমালোচিত হয়েছে সরকার। আবার অত্যন্ত কড়াকড়ি করতে গিয়ে মদ খাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে জেলে ভরা হয়েছে। জেলে থাকা এমনই এক ব্যক্তি জামিনের আবেদন করেছিলেন হাই কোর্টে। আবেদনকারী নীরজ সিং গতবছর নভেম্বর থেকে জেলে রয়েছেন। সেই আবেদনের শুনানির সময়ই আদালত পর্যবেক্ষণ করে, ‘মদ নিষিদ্ধ করার নীতি প্রয়োগে বিহার সরকারের ব্যর্থতা ঝুঁকিতে ফেলছে রাজ্যের জনগণকে।’
আদালতের বক্তব্য, ‘সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হল মদের উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পরেই বিষমদকাণ্ডের সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি যারা বিষমদ খাওয়ার করাণে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের চিকিৎসার জন্য কোনও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকল তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য সরকার।’ এর জন্য সরকারকে তিরস্কার করেছে আদালত। উচ্চ আদালতের মতে, এই ধরনের রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত পৃথক স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা উচিত সরকারের।
এদিকে রাজ্যে ‘অবৈধ মাদকের ব্যাপক ব্যবহার’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে হাই কোর্ট। রাজ্য জুড়ে মাদক পাচার বন্ধ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য সরকারকে তিরস্কার করেন বিচারপতি। আদালত বলে, ‘রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে চরস, গাঁজা সেবন বেড়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাদকাশক্তরা ২৫ বছরের ছোট।’ এদিকে আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে আদালত বলে, ‘মদ নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি বেশ ভালো চোখেই দেখেন পুলিশ, আবগারি দফতর এবং পরিবহণ দফতরের কর্তারা। কারণ এর অর্থ তাঁরা বেশি টাকা (ঘুষ) উপার্জন করতে পারবেন। এইসব ক্ষেত্রে চক্রের মাথার বিরুদ্ধে তাই মামলার সংখ্যা খুবই কম।’