দেশের প্রতিটি আদালতের বিচারপতিদের জন্য কড়া নির্দেশিকা দিল সুপ্রিম কোর্ট। কোনওরকম পুরুষতান্ত্রিক বিচার চলবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিল সর্বোচ্চ আদালত। মহিলাদের পুরুষদের সঙ্গে সমান চোখে দেখার ও বিচার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী মহিলাদের পোশাক, পূর্ব আচরণ, নীতিবোধ, সতীত্ব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না বিচারকরা। একইসঙ্গে যৌন হেনস্থার মামলায় মহিলা বিচারপ্রার্থীদের কোনওরকম আপোষ মেনে নিতে বাধ্য করা যাবে না। নির্দেশিকায় বর্জন করতে বলা হয়েছে, 'বর্তমান বিচারব্যবস্থায় বহুল প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক-মহিলাবিদ্বেষী মনোভাব'।
দেশের সব আদালতের বিচারপতিদের মেনে চলার জন্য একটি তালিকা তৈরি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে বিচার ব্যবস্থায় সামাজিক নৈতিকতার ভাবনাকে পুরোপুরি ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
মহিলা বিচারপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে বিচার যেন সামাজিক রীতি দ্বারা প্রভাবিত না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোনও মামলায় নির্যাতিতার পোশাক, পূর্ব আচরণ, নীতিবোধ ইত্যাদি নিয়ে উল্টে তাঁর প্রতি নেতিবাচক মন্তব্য করতে পারবেন না বিচারকরা।
রায় প্রদানের ক্ষেত্রে অনেকসময়েই দেখা যায় নির্যাতিতাকে অভিযুক্ত বিয়ে করতে রাজি কিনা তার প্রশ্ন করা হচ্ছে। চলতি মাসেই এমনই একটি মামলায় অভিযুক্তকে এই প্রশ্ন করেন দেশের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে স্বয়ং। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে একটি হেনস্থার বিচার চলাকালীন অভিযুক্তদে নির্যাতিতার হাতে রাখি বেঁধে দিতে বলা হয়। এই ধরণের ঘৃণ্য বিচার পন্থার বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছেন বহু মানুষ।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে আদালত কখনও কোনও মহিলাকে বিয়ে করার পরামর্শ দিতে পারে না। কোনও রকম আপোষমূলক বিচার এবার থেকে অপ্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে পুরুষদের কোনও ঘৃণ্য আচরণতে পুরুষত্বের দোহাই দিয়ে লঘু হিসাবে দেখা যাবে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।