প্রিয়াঙ্কা দেববর্মন
উত্তর ত্রিপুরার কদমতলায় দুর্গাপুজোর চাঁদা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্য়ে সংঘর্ষ হয়েছিল। এরপর মঙ্গলবার বিভিন্ন জায়গায় শান্তি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতিরিক্ত ফোর্স, টহলদারি, ভিডিয়োগ্রাফি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক দেবপ্রিয়া বর্ধন জানিয়েছেন, কিছু জায়গায় শান্তি বৈঠক হয়েছে। গতকালও হয়েছিল। জেলায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য সকলের সাথে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
কী হয়েছিল ত্রিপুরায়?
সোমবারের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আসন্ন দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর ও জিনিসপত্রে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠলে সংঘর্ষ বাধিত হয়।
পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছিলেন, পুলিশের গুলিতে এই মৃত্যু হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। কদমতলায় পুজোর চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আরও দুজন আহত হন। এ ঘটনায় অন্তত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, উভয় সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তারা বলেছে যে তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং জনগণকে জমায়েত এড়াতে এবং গুজব বা যাচাইবিহীন তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, রবিবার সন্ধ্যা থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারা অনুযায়ী জনসাধারণের চলাচলে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
ধর্মনগরের সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট সজল দেবনাথের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগরের কদমতলা থানার এক্তিয়ারে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
উত্তর ত্রিপুরা জেলা পুলিশ জানিয়েছে, 'কদমতলা থানা এলাকায় যে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছে, তা উভয় সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে সমাধান করা হয়েছে।
কদমতলার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। দয়া করে গুজব ছড়াবেন না।
কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন বলেন, রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছে। গতকাল পুলিশের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। তখন পুলিশ ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতো না। পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা থাকবে কীভাবে? এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন) দায়ী। তাকে তার সম্পূর্ণ ব্যর্থতা স্বীকার করতে হবে।
বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্য সরকার কড়া ব্যবস্থা নেবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যারা এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।