করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেও মিউকোরমাইকোসিস নামক ছত্রাকের সংক্রমণে প্রাণ হারাচ্ছেন দেশের অনেকে। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষদের ক্ষেত্রেই এই সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে জানাচ্ছেন, শুধু হাসপাতাল নয়, বাড়ির এসি বা কুলারেও থাকতে পারে ব্ল্যাক ফাংগাস। এবং সেখান থেকেই তা ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমিত করতে পারে যে কাউকে। মূলত যে ব্যক্তিদের ইমিউনিটি কম, তাঁদের এই ছত্রাকে সংক্রমিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
এই ছত্রাক রয়েছে এমন পরিবেশে গেলে কোনও ব্যক্তি সহজেই সংক্রামিত হয়ে যান৷ বিশেষত, কাদামাটি, পাতাময়, সার আর পচে যাওয়া জিনিসের মধ্যে এই ফাংগাস থাকে৷ কোভিড রোগী আর ডায়াবেটিস রোগী, যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি৷
মিউকোরমাইকোসিস নামক মারাত্মক এই ছত্রাক সংক্রমণের ফলে রোগীরা কান, চোখ, চোয়ালের সমস্যায় ভুগছেন৷ শরীরের কোনও ক্ষত, কাটা জায়গা, পুড়ে যাওয়া ক্ষতস্থান দিয়ে শরীরে ঢোকে এই ব্ল্যাক ফাংগাস। গলা, ত্বক থেকে শুরু করে মস্তিস্কেও ছড়িয়ে পড়ছে ছত্রাকের সংক্রমণ। শেষে হচ্ছে মর্মান্তিক মৃত্যু৷ স্বাস্থ্য দফতরের বিবৃতি অনুযায়ী এই ছত্রাকের আক্রমণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত৷ করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে উঠলেও শরীরে নতুন করে থাবা বসাচ্ছে ব্ল্যাক ফাংগাস৷
দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে এলে, ত্বকের সংক্রমণ শুরু হলে কিংবা ব়্যাশ দেখা দিতে শুরু করলে আপনার সত্বর চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ নেওয়া দরকার। এছাড়া, মুখের পেশিতে যন্ত্রণা, দাঁতে ব্যাথা, চোয়ালে ব্যাথা হতে শুরু করলে বুঝবেন আপনি মিউকরমাইকোসিসে সংক্রমিত হতে পারেন৷ এদিকে যদি নাক বন্ধ হয়ে যায় বা নাক-চোখ দিয়ে জল পড়তে শুরু করে কিংবা নাক থেকে রক্ত বেরোতে শুরু করে, তাহলেও সতর্ক হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ এড়াতে ধুলোবালি রয়েছে এমন জায়গা থেকে দূরে থাকুন৷ জুতোর সঙ্গে মোজা ব্যবহার করুন৷ খালি পায়ে ঘুরবেন না৷ ব্লাড-সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে অ্যান্টি ফাংগাল ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে৷ সাধারণত মানুষ নিজের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে এর মোকাবিলা করতে পারে সহজেই৷ কিন্তু করোনা সংক্রমণের চিকিৎসায় রোগীকে এমন কিছু ওষুধ দেওয়া হয়, যাতে তার স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে এই ফাংগাল সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।