একলব্যের গল্প হচ্ছে ভারতের বিভিন্ন জায়গায়। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাক্ষাৎকারে এনিয়ে বিস্তারিতভাবে বলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
এনিয়ে কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতে বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন। রাহুল কী বলেছেন সেকথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘একলব্যের গল্প শুনেছেন? আপনার যদি মনে হয় কী হচ্ছে গোটা দেশে সেটা হল লক্ষ লক্ষ একলব্যের গল্প, রোজ এই একই স্টোরি। দক্ষ মানুষদের এখানে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা সর্বত্র হচ্ছে।’
‘দক্ষতাকে সম্মান জানানো, তাদের অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করা এভাবেই ভারতের ইতিবাচক দিকগুলি সামনে আসবে। ভারতের মোট জনসংখ্যার ১-২ শতাংশকে শক্তিশালী করে আপনি ভারতের পুরো শক্তির ব্যবহার করতে পারবেন না।’
‘আমি এনিয়ে একটা উদাহরণ দিতে চাইছি। যখন আমরা সরকারে ছিলাম, আমরা স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কথা বলতাম। ডঃ মনমোহন সিং যাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন তিনি একবার আমরা সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন যে তাঁর পরিকল্পনা হল আইটিআই তৈরি করা। সেখানে প্লাম্বিং, হেয়ারকাটিং, কাঠের কাজ সহ নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’
‘এটা শুনে আমি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলাম যদি আপনি আইটিআই খোলেন আর লক্ষ লক্ষ নাপিতকে প্রশিক্ষণ দেন, কিন্তু নাপিতদের মধ্য়ে তো দক্ষতা আগে থেকেই রয়েছে। তাহলে আইটিআইতে এটা না করে ভারতের লক্ষ লক্ষ নাপিতের কাছে গিয়ে তাঁদের সার্টিফিকেশন কোর্স করিয়ে দিন। যাঁরা এই সার্টিফায়েড হবেন তাঁদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে পারেন। ভারতের নাপিতদের প্রশিক্ষণ দিতে কতমাস সময় লাগবে? দু মাস, তিন মাস?’
‘তিনি আমার দিকে কেমন ভাবে যেন তাকাচ্ছিলেন। তিনি ভাবছিলেন আমি হয়তো পাগল! কিন্তু নাপিত, কলের মিস্ত্রি, ছুতোর মিস্ত্রি তাদের আগে থেকেই দক্ষতা রয়েছে।’
রাহুল বলেন, ‘আমি সম্প্রতি সুলতানপুর দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। সেখানে একজন জুতো প্রস্তুতকারকের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি বললেন, ৪০ বছর ধরে কাজ করছি। কেউ আমাকে সম্মান করে না। একমাত্র তাঁর বাবা ছাড়া। এরপর লখনউতে মুচিদের জন্য একটা কোর্সের কথা বলা হয়। সেখানে গিয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমায় কী শেখাবেন? সেখান থেকে বলা হয়েছিল কীভাবে জুতো তৈরি করতে হয়।’
‘কিন্তু তিনি তো ৪০ বছর ধরে জুতোই তৈরি করেন। …ভারতে দক্ষতার অভাব নেই। আসলে সেই দক্ষতাকে সম্মান জানানো হয় না। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ছুতোর মিস্ত্রি ভারতের। কিন্তু তাঁদের দক্ষতাকে সম্মান জানানো হয় না…’