‘দেশে যারা মুসলিমদের গণহত্যার জন্য দায়ী তারাই অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল।’ বিদ্বেষ ছড়ানো বক্তৃতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলার আবেদন জানিয়ে এমনই দাবি করেন শারজাহ নিবাসী এক যোগা শিক্ষক। হরপ্রীত সেহগাল মানুসুখানি নামক সেই আবেদনকারী আরও দাবি করেন, ‘কাশ্মীর ফাইলস সিনেমাটি তৈরি করতে অর্থ দিয়েছিল একটি রাজনৈতিক দল।’
হরপ্রীত দাবি করেন, তাঁর কাছে এক বিজেপি নেতা স্বীকার করেন যে, ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতকে একটি হিন্দু রাষ্ট্র করার প্রচেষ্টা চলছে। এর জন্য শীর্ষ স্থানীয় বিজেপি নেতারা সংখ্যালঘুদের হত্যা করিয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষক, সাংবাদিক, সৈনিক এবং সুশান্ত সিং রাজপুতের মতো অভিনেতাকেও হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং আরও ৩৮ জনকে এই মামলার আবেদনে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকেই নোটিশ পাঠানো হয়নি।
আবেদনকারীর দাবি, ভারতে বিগত দিনে অন্তত ৫৮টি এমন ঘটনা ঘটেছে যেখানে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে ভাষণের মাধ্যমে। নিজের বক্তব্য তুলে ধরার সময় আবেদনকারী আদালতে কেঁদে ফেলেন। তাঁর কথায়, ‘বিদ্বেষ ছড়ানো এই বক্তৃতা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।’ এদিকে এর প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিতের বেঞ্চ বলে, 'আপনি হয়ত ঠিক বলছেন, তবে নির্দিষ্ট তথ্য পেশ করুন। আপনার আবেদন নির্দিষ্ট নয়। আমরা নির্দিষ্ট কোনও ঘটনার ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ করতে পারি বা নির্দেশ দিতে পারি।' সুপ্রিম কোর্টের তরফে আরও বলা হয়, ‘এই বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতার ফলে সবকিছু বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে এবং আপনার এই আবেদন যুক্তিযুক্ত। এটিকে রোধ করা দরকার।’ এই আবহে আবেদনকারীকে আদালত নির্দেশ দেয়, নির্দিষ্ট ঘটনার তথ্য দিয়ে ৩১ অক্টোবর একটি হলফনামা পেশ করতে। ১ নভেম্বর মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে।