স্বতন্ত্র কলেজিয়ামের মাধ্যমে নিয়োগ করা হোক নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের, এই দাবিতে এবার মামলা দায়ের করা হল সুপ্রিমকোর্টে। 'অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস' নামক একটি এনজিও এই আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের করেছে শীর্ষ আদালতে। আবেদনকারীর দাবি, কেন্দ্র নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ করায় সংবিধানের ১৪ এবং ৩২৪(২) ধারা লঙ্ঘন হয়।
আবেদনে বলা হয়, নিরপেক্ষ এবং স্বতন্ত্র কলেজিয়াম বা নির্বাচন কমিটি নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বেছে নিক। বিগত ২০১৫ সালে আইন কমিশন যেই প্রস্তাব দিয়েছিল, সেই প্রেক্ষিতে এই আবেদন। নির্বাচন কমিশন যে ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে তৈরি করা হয়েছিল, তা লঙ্ঘন করে বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়া। এইভাবে কমিশনকে কার্যনির্বাহকের একটি শাখা করে তোলা হচ্ছে।
আবেদনে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কেবল অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকে, এমন না, বরং এটি ক্ষমতাসীন সরকার এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যকার একটি বিচার ব্যবস্থা গ্রহণকারী সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে একমাত্র অংশগ্রহণকারীরা কার্যনির্বাহক হতে পারে না। কারণ এটি ক্ষমতাসীন দলকে এমন কাউকে বাছাই করার সুযোগ করে দেয় যাঁর আনুগত্য নিশ্চিত। এর জেরে নির্বাচনের প্রক্রিয়া হেরফের হতে পারে।
উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ উঠেছে, তারা নির্বাচন কমিশনারদের বেছে বেছে তুলে নিয়ে এসেছে এবং কমিশনের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি বড় নির্বাচনের সময় প্রতিটি সরকার বিশেষ করে ভোটের দিনক্ষণ, কয় দফার ভোট, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিজেদের একটি পছন্দের তালিকা তৈরি করে৷ কমিশনের সঙ্গে এই নিয়ে ঘোষিত ও অঘোষিত দুইরকমই আলোচনা হয়৷ তবে অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিত করার জন্য কমিশনই শেষ সিদ্ধান্ত নেবে। সেই সিদ্ধান্ত যাতে সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ হয়, তার জন্যই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র কলেজিয়ামের দাবি করা হয়েছে।