দীপাবলিতে দিল্লি এবং এনআরসি অঞ্চলে পরিবেশ বান্ধব বাজি, অর্থাৎ ‘গ্রিন ফায়ার ক্র্যাকার্স’ বিক্রি এবং ফাটানোর অনুমতি দেওয়ার আর্জি সুপ্রিম কোর্টে। বাজি প্রস্তুতকারকদের একাধিক আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ রায় সংরক্ষণ করে জানিয়ে দিয়েছে, আগামী সোমবার তারা বিস্তারিত নির্দেশ জারি করবে।
শুক্রবার শীর্ষ আদালতে এনসিআরের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আবেদন করেন, দীপাবলির চার-পাঁচ দিন যেন বাজি ফাটানোর উপর কোন সময়ের বিধিনিষেধ না রাখা হয়, কারণ অনেকেই ওই দিন সকালে ‘নরক চতুর্দশী’ পালন করেন আতশবাজি সহকারে। মেহতা সওয়াল করেন, 'শিশুরা যেন সময়ের সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উৎসবটি উপভোগ করতে পারে। দুই ঘণ্টা অত্যন্ত কম সময়, আমার ভেতরের শিশুটি প্রধান বিচারপতির ভেতরের শিশুটির কাছে আবেদন জানাচ্ছে।' যদিও প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করেন, আদালতের পক্ষে আগের আদেশ পরিবর্তন করা কঠিন হবে, কিন্তু অনুরোধটি বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। মেহতা আরও বলেন, আমরা একটা পরামর্শ দিতে পারি যে, দীপাবলিতে বাজি পোড়ানো নিয়ে এনসিআর একটি ভারসাম্য বজায়কারী পরামর্শ দিচ্ছে। যাতে রাতে অন্তত ২ ঘণ্টা বাজি পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। কিছু শর্ত আরোপ করে এই অনুমতি দেওয়ার প্রার্থনা করা হয়েছে। তারমধ্যে প্রথমটিই হল ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অনুমোদিত পরিবেশ বান্ধব বাজি তৈরি, বিক্রি ও পোড়াতে হবে। দ্বিতীয়টি হল, দিল্লি সরকার, এনসিআর কর্তৃপক্ষ এবং পেট্রলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস সেফটি অর্গানাইজেশনকে দায়িত্ব নিতে হবে, যাতে কোনও আপত্তিকর বাজি উৎপাদন, বিক্রি অথবা পোড়ানো না হয়।
তুষার মেহতা বলেন, বাচ্চাদের অন্তত দুটো দিন বাজি পুড়িয়ে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে দেওয়া যেতে পারে। ইংরেজি নববর্ষ বরণের রাতে কেবলমাত্র রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাজি পোড়ানোর প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। গুরুপরবের দিন সকাল ৪টে থেকে ৫টা এবং রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বাজি পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া হোক। বিয়েতেও পরিবেশ বান্ধব বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। সলিসিটর জেনারেল আরও জানান, গ্রিন ক্র্যাকার্সগুলি বাজারে নিশ্চিতভাবে বিক্রি হয় তা নিশ্চিত করতে দিল্লি এবং এনসিআর রাজ্যগুলির সরকার একটি বিস্তৃত প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে। সলিসিটর জেনারেল নিশ্চিত করেছেন যে গ্রিন ক্র্যাকারের নিয়ম কঠোরভাবে কার্যকর করা ছাড়াও, দিল্লি এবং এনসিআর রাজ্যগুলির সরকার বাজারে কোন ধরণের ‘লড়ি’ বা সিরিজ-ক্র্যাকার্স বিক্রি হবে না এবং অনলাইনেও বাজির বিক্রি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিক্রি শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীদের মাধ্যমেই হবে, এবং তাদের অবশ্যই শুধুমাত্র অনুমোদিত বাজি বিক্রি করতে হবে। ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন-সহ কোন ই-কমার্স ওয়েবসাইট অনলাইন অর্ডার নেবে না এবং বিক্রি করবে না, তা নিশ্চিত করবে এনসিআর রাজ্য এবং জিএনসিটিডি ও পিইএসও। তবে সুপ্রিম কোর্ট, দীপাবলির সময় দিল্লি ও জাতীয় রাজধানী এলাকায় পরিবেশ বান্ধব সবুজ বাজি ব্যাবহারের ওপর জারি সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করার বিষয়ে রায়দান স্থগিত রেখেছে।