মুম্বইয়ে অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা আধিকারিকের উপর হামলার ঘটনা 'রাগের স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ'। প্রবল চাপের মুখে মারধর নিয়ে এমনই সাফাই দিল শিবসেনা। একইসঙ্গে উদ্ধব ঠাকরের দলের বক্তব্য, বাকস্বাধীনতার ‘আড়ালে’ প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল বা মুখ্যমন্ত্রীর মতো সাংবিধানিক পদের ব্যক্তিদের ‘অযাচিত ও চূড়ান্ত সমালোচনা’ করা উচিত নয়।
শনিবার রাতের দিকে বিবৃতিতে শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত সাফাই দেন, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের 'অবমাননাকর' কার্টুন ফরোয়ার্ড করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা আধিকারিক। তবে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাউত।
গত শুক্রবার ৬২ বছরের অবসরপ্রাপ্ত ওই নৌসেনা আধিকারিককে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় শিবসেনা নেতা কমলেশ কদম ও তাঁর দলবলের। তা নিয়ে রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
চাপের মুখে পড়ে ছ'জনকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতেই না কাটতেই দিব্যি জামিন পেয়ে যায় শিবসেনা নেতা-সহ সব ধৃতেরা। তা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিকের পরিজনরা। কান্দিভলিতে অ্যাসিসট্যান্ট পুলিশ কমিশনারের অফিসের বাইরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ ধারা (অস্ত্র ও অন্যান্যভাবে গুরুতর আঘাত করা) এবং ৪৫২ ও ৪৫০ (বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ) ধারায় মামলা রুজু করার দাবি জানান তাঁরা। যা জামিন-অযোগ্য ধারা।
সেই বিক্ষোভে ছিলেন মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদের বিরোধী দলনেতা প্রবীণ দাড়েকর-সহ অন্যান্যরা। পাশাপাশি প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিককে মারধরের ঘটনায় মহারাষ্ট্র সরকারের তুমুল সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতারা। যদিও রাউতের দাবি, ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ঘটনা নিয়ে যেভাবে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা ততোধিক ‘দুর্ভাগ্যজনক’। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘দু'পক্ষেরই সংযম দেখানো উচিত। মানুষের সংযমকে চাপ দেওয়া হয়, যখন বাকস্বাধীনতার আড়ালে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল বা মুখ্যমন্ত্রীর মতো সাংবিধানিক পদগুলিকে অযাচিত ও চূড়ান্ত সমালোচনা করা হয়।’
প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিকের উপর হামলার ঘটনায় প্রবল চাপের মুখে পড়েও নিজের অবস্থানে কার্যত অনড় থাকেন রাউত। ওই নৌসেনা আধিকারিকের উপরই কার্যত হামলার দায় চাপিয়ে দেন। তিনি বলেন, 'আমাদের সবাইকে দায়িত্বপূর্ণভাবে কাজ করতে হবে এবং একে অপরের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।'