দক্ষিণ চিন সাগরে ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টায় বেজিং। সেদিকে তাকিয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিতর্কসভায় সমুদ্রপথে নিরাপত্তা বৃদ্ধির উপর বাড়তি জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেজন্য পাঁচটি মূল নীতির প্রস্তাবও দিলেন।
সোমবার সেই বিতর্কসভায় শান্তিপূর্ণভাবে সামুদ্রিক দ্বন্দ্ব মিটিযে নেওযার পক্ষে সওয়াল করেন মোদী। যে কাজটা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক হবে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সব দেশকে আর্জি জানান। মোদীর কথায়, ‘পারস্পরিক ভরসা এবং বিশ্বাসের তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র সেভাবেই আমরা বিশ্বে শান্তি এবং সুস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।’
মোদী যে বার্তা আদতে ঘুরিয়ে চিনকেই দিতে চেয়েছেন বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। যে বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে আসছে ভারত। একই কাজ আসিয়ান অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে (এডিএমএম-প্লাস) বৈঠকেও করেছিলেন রাজনাথ সিংও। তিনি জানিয়েছিলেন, প্রত্যেক দেশের সার্বভৌমত্ম, অখণ্ডতা, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইন পালনের মাধ্যমে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে মুক্ত এবং বাধাহীন রাখতে চায় ভারত। দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিং যে আগ্রাসী মনোভাব দেখায়, নাম না করে সে বিষয়টি টেনে এনেছিলেন রাজনাথ। তিনি জানিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক শান্তি এবং সুরক্ষার ক্ষেত্রে নয়া চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পুরানো উপায়ে সেগুলি মেটানো যাবে না। রাজনাথ বলেছিলেন, ‘সামুদ্রিক ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি ভারতের কাছে উদ্বেগের একটি বিষয়। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি, স্থিরাবস্থা, সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের জন্য সামুদ্রিক মাধ্যমে যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ সঙ্গে যোগ করেছিলেন, ‘সেদিক দিয়ে দক্ষিণ চিন সাগর শুধুমাত্র ওই এলাকা নয়, তার বাইরের এলাকারও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই আন্তর্জাতিক জলপথে চলাফেরার স্বাধীনতা, উড়ান এবং নির্বিঘ্নে বাণিজ্যের সমর্থন করছে ভারত।’
সোমবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে 'সামুদ্রিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি - আন্তর্জাতিক সহযোগিতা' যোগ দেন মোদী। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সেই বিতর্কসভায় অবাধ বাণিজ্যের পক্ষেও সওয়াল করেন মোদী। তিনি বলেন, 'সামুদ্রিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের সমস্ত বাধা তুলে দেওয়া উচিত। সমুদ্রপথে কতটা সক্রিয়ভাবে বাণিজ্য হচ্ছে, তার উপর আমাদের সমৃদ্ধি এবং উন্নতি নির্ভরশীল। সেই ক্ষেত্রে কোনও বাধা তৈরি হলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি ধাক্কা খাবে। অবাধ সামুদ্রিক বাণিজ্য প্রাচীনকাল থেকে ভারতের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।' সেইসঙ্গে তিনি জানান, সামুদ্রিক পরিবেশ এবং সম্পদকেও সংরক্ষণ করতে হবে।