রাজধানী ঢাকার প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে বাংলাদেশের সাধারণ ছাত্র–সহ সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর জন্য রইল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নানা দরাজ ঘোষণা। শেখ মুজিবুর রহমানেকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নরেন্দ্র মোদী স্মরণ করলেন মুক্তিযুদ্ধের সেই আগুনঝরা দিনগুলিকে। আর ইতিহাসে জুড়ে দিলেন নিজেকেও। তিনি বলেন, ‘জীবনের শুরুর দিকে আন্দোলনগুলির অন্যতম ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে সামিল হওয়া। ২০–২২ বছর বয়সে আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সামিল হয়েছিলাম। অনশন করেছি। জেলেও যেতে হয়েছে। এই স্বাধীনতার জন্যে আমাদের বুকেও ততটাই অপেক্ষা ছিল যতটা আপনাদের ছিল।’
সুতরাং বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্ক আজকের নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে। আর শুধু সম্পর্কই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে তাঁর অংশগ্রহণও ছিল বলে দাবি করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, আমি ও আমার সঙ্গীরা সত্যাগ্রহ করেছিলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থনে সামিল হওয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। জেলেও গিয়েছিলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এখানে যতটা ইচ্ছা ছিল, ততটাই ছিল ওপারে। তারপর আজ মোদীর গলায় ছিল গোবিন্দ হালদারের সেই বিখ্যাত পঙক্তি যা সাবিনা ইয়াসমিনের গলায় অন্যন্য মাত্রা পেয়েছে। স্পষ্ট বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর উচ্চারণ—এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলব না।
তবে এদিন নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে ইন্দিরা গান্ধীর চেষ্টা ও তাঁর ভূমিকা সর্বজনবিদিত। অটলবিহারী বাজপেয়ী বলেছিলেন, মুক্তি সংগ্রামে জীবনের আহুতি দেওয়ার জন্য লড়ছি না, ইতিহাসে একটা নতুন দিশা দেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রণব দা বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ধৈর্য্য, প্রতিজ্ঞা ও আত্মসংযমের প্রতীক। ভারত–বাংলাদেশ একসঙ্গে এগিয়ে যাবে। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, পারস্পরিক বিশ্বাসে সমাধান হতে পারে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ছাত্রদের জন্য সুবর্ণজয়ন্তী স্কলারশিপ ঘোষণা করেন মোদী। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়ার বার্তা ছিল তাঁর মুখে। দু’দিনের বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। লকডাউনের পর মোদীর এই প্রথম বাংলাদেশ সফর। বঙ্গ ভোটের ঠিক একদিন আগে মোদীর বাংলাদেশ সফর রাজনৈতিক মহলে জল্পনার ঝড় তুলেছে। বাংলাদেশকে ১২ লক্ষ ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।